এফআর টাওয়ারের আগুন ‘শর্ট সার্কিট’ থেকে

Fire-FR-Tower-Banani-amo-28032019-0018

বনানীর এফ আর টাওয়ারের আগুন ছড়িয়েছিল অষ্টম তলা থেকে, আর বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে সেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল বলে প্রতিবেদন দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।

এ কমিটির প্রধান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব তরুণ কান্তি শিকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ২১ এপ্রিল তারা সচিবের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিদেশ সফর শেষে ফিরলে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

“সেখানে আগুন লাগার কারণ শর্ট সার্কিট। আমাদের ধারণা, ওই ভবনের অষ্টম তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল। এ বিষয়ে আমরা রিপোর্ট দিয়ে দিয়েছি।”

গত ২৮ মার্চ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের এফআর টাওয়ারে আগুন লেগে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। পরে জানা যায়, ১৮ তলার অনুমোদন নিয়ে ভবনটি ২৩ তলা করা হয়েছিল এবং অগ্নি নিরাপত্তার যথাযথ ব্যবস্থা সেখানে ছিল না।

বাণিজ্যিক ওই ভবনের পুরোটা জুড়েই ছিল বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অফিস, রোস্তারাঁ ও কনভেনশন সেন্টার। অষ্টম তলায় ছিল টেক্সটাইল কোম্পানি স্পেক্ট্রা এসএন টেক্সের কার্যালয়।

চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে অভিজাত এলাকা বনানীর ওই ভবনে আগুন লাগলে চারটি তদন্ত কমিটি করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কমিটি তারই একটি।

সুরক্ষাসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব তরুণ কান্তি শিকদারকে আহ্বায়ক করে গঠিত ছয় সদস্যের ওই কমিটিকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান এবং সার্বিক বিষয় তদন্ত করে সুপারিশ দিতে বলা হয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপণা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি অগ্নিকাণ্ডের দুই দিন পর ঘটনাস্থলের পাশে এক গণশুনানির আয়োজন করেছিল। এফআর টাওয়ারের বিভিন্ন তলায় থাকা প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বক্তব্য, অভিজ্ঞতা ও অভিযোগ শোনা হয় সেখানে।

৩১ মার্চ ওই গণশুনানির পর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফয়জুর রহমান বলেছিলেন, “আমরা জানতে পেরেছি, ভবনের অষ্টম তলায় স্পেক্ট্রা এসএন নামে একটি বায়িং হাউজের অফিস থেকে আগুনের সূত্রপাত। শুনানিতে তারা বলেছেন, শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত।”

তবে স্পেক্ট্রা এসএন এর সহকারী ব্যবস্থাপক মো. কফিল উদ্দিন সেদিন দাবি করেন, আগুন প্রথমে তাদের ফ্লোরে লাগেনি। তারা ওপর থেকে আগুনের ফুলকি পড়তে দেখেছেন।

অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে আলাদা তদন্ত কমিটি করেছিল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। সেই কমিটির নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন।

কাজের অগ্রগতি জানতে চাইলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, তাদের রিপোর্ট ‘মোটামুটি চূড়ান্ত’। তবে জমা দেওয়ার আগে আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত তারা সময় চেয়েছেন। তাই এখনই কোনো তথ্য প্রকাশ করতে চান না।

“আগামী সপ্তাহে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ডিজির কাছে রিপোর্ট দাখিল করব। সেখানে অগ্নিকাণ্ডের কারণের পাশাপাশি কিছু সুপারিশও থাকবে। সেখান থেকে হয়তো মন্ত্রণালয়ে দিয়ে দেবে।”

Pin It