চীনা পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর পর এবার চীনকে এর পাল্টা জবাব না দেওয়ার জন্য হুঁশিয়ার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
সোমবার তিনি এ হুঁশিয়ারি দিয়ে বাণিজ্য যুদ্ধে আরো কঠোর অবস্থানই জানান দিয়েছেন। চীন একটি বাণিজ্য চুক্তিতে রাজি না হলে তাদের অবস্থা আরো বেগতিক হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প প্রশাসন গত শুক্রবারই ২০ হাজার কোটি ডলার মূল্যের চীনা পণ্যে শুল্ক দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ানো এবং নতুন করে আরো পণ্যেশুল্কারোপের ঘোষণা দিয়ে উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
এর মধ্যেই এবার একের পর এক টুইটে ট্রাম্প চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে পাল্টা শুল্কারোপের পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য সতর্ক করলেন।
টুইটে তিনি বলেছেন, “এতগুলো বছরে চীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য থেকে বহু সুবিধা নিয়েছে। সুতরাং, তাদের আর এখন পাল্টা কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত নয়। এমন করলে পরিস্থিতি বরং আরো খারাপই হবে।”
“পণ্য উৎপানকারীরা তখন চীনকে বাদ দিয়ে অন্যান্য দেশ থেকে পণ্য উৎপাদন করবে। চীনে আর ব্যবসা করার কেউ থাকবে না। সেটা চীনের জন্য খুবই খারাপ হবে আর যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভাল হবে… ফলে চীনের পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না,” বলেন ট্রাম্প।
তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা চীনা পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধির মাশুলও আমেরিকার ভোক্তাদেরকে দিতে হবে না বলেও ট্রাম্প উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মার্কিনীরা একই পণ্য অন্য কোনোখান থেকে কিনে শুল্ক এড়াতে পারে। যদিও ট্রাম্পের শীর্ষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলছেন, বাণিজ্য বিরোধের কারণে দুই পক্ষেরই ভোগান্তি হবে।
ট্রাম্প গত শুক্রবার ২০ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করেন। তাছাড়া, বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতিত না হলে আরো ৩০ হাজার কোটি ডলার মূল্যের চীনা পণ্যে নতুন করে শুল্কারোপের হুমকিও দিয়ে রেখেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
বাণিজ্য আলোচনায় অচলাবস্থা এবং বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতির দেশের মধ্যে নতুন উত্তেজনার কারণে বিশ্ব বাজারও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং এশিয়ার শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের পাল্টা জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে চীন। ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে চীন সোমবার বলেছে, তারা হিমায়িত সবজি এবং তরল প্রাকৃতিক গ্যাসসহ আরো বেশ কিছু মার্কিন পণ্যে উচ্চহারে শুল্কারোপ করবে।
চীনের অর্থমন্ত্রণালয় বলেছে, তারা ৫ হাজার ১৪০ টি মার্কিন পণ্যে ৫ থেকে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করবে। এ শুল্ক কার্যকর হবে ১ জুন থেকে।
ওদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে চীনা পণ্যে যে বাড়তি শুল্কারোপ করেছে তা পরিশোধ করতে হবে চীন থেকে পণ্য আমদানি করা মার্কিন কোম্পানিগুলোকে। ১০ শতাংশর তুলনায় ২৫ শতাংশ শুল্ক দেওয়া কোম্পানিগুলোর জন্যও কঠিন বলেই অভিমত অর্থনীতিবিদদের। ফলে এর কিছুটা বোঝা ভোক্তাদের ঘাড়ে চাপারও সম্ভাবনা আছে।
চীন গত শুক্রবারেই যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং এর সমুচিত পাল্টা পদক্ষেপ তাদেরকে নিতেই হবে বলে জানায়।
অতীতে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যে শুল্কারোপের পরপরই চীন তাৎক্ষণিকভাবে এর পাল্টা জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করেছিল। চীন কোনো তিক্ত ফল গলধকরণ করবে না বলেই প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে।