ভারতের ইনিংসের ৪৮তম ওভারের চতুর্থ বলের ঘটনা। মোহাম্মদ আমিরের মাথা তাক করা বলে সজোরে ব্যাট চালিয়েও নাগাল পেলেন না বিরাট কোহলি। পাকিস্তানিরা আউটের আবেদন করলেও আম্পায়ার শুরুতে আউট দেননি। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে নিজেই ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটা ধরলেন কোহলি।
কোহলি নিজেই চলে যাওয়ায় মনে হয়েছিল, বল ব্যাটে লেগেছে বিধায় নিজেই ‘ওয়াক’ করেছেন ভারত অধিনায়ক। এমন ঘটনা তো বেশ কয়েকবারই দেখেছে ক্রিকেট। তবে টিভি পর্দায় রিপ্লে দেখানোর পরই খটকার শুরু। রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা গেল, ব্যাটের সঙ্গে বলের কোনো সংযোগই ঘটেনি। বরং কোহলির ব্যাটের অনেকটা ওপর দিয়েই গেছে। স্নিকোমিটারও নিশ্চিত করেছে, বল কোহলির ব্যাটে লাগেনি।
এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে আলোচনার বিষয়বস্তু কোহলির এই ‘ওয়াক’। বল ব্যাটে না লাগা সত্ত্বেও কেন নিজেই ফিরে গেলেন কোহলি? ধারণা করা হচ্ছে, শটটা খেলার সময় কোনো একটা শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক। সেই শব্দ শুনেই তাঁর ধারণা হয়েছিল, বল ব্যাটে লেগেই সরফরাজ আহমেদের গ্লাভসে জমা পড়েছে। আর সে কারণেই আম্পায়ার আউট না দেওয়া সত্ত্বেও নিজেই ফেরত গেছেন কোহলি।
তবে তিনি যে ভুল শব্দ শুনেছেন, এটি পরিষ্কার হয়ে গেছে টিভি রিপ্লে দেখার পরেই। কোহলি নিজেও খুব সম্ভবত ড্রেসিংরুমে ফিরে গিয়ে রিপ্লে দেখেছেন। ভুল শব্দ শুনে ‘ওয়াক’ করায় তিনি যে নিজের ওপর নিজেই বিরক্ত হয়েছেন, সেটি তাঁর রাগান্বিত অভিব্যক্তি দেখেই বোঝা গেছে। পরে নিজেই টুইট করে বলেছেন, ‘খুব সম্ভবত আজ একটি ভুল কাজ করে ফেলেছি আমি।’
৭৭ রান নিয়ে ক্রিজে থাকা কোহলির বিদায়ের পরে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি ভারতও। কোহলি আউট হওয়ার পরের ১৪ বলে মাত্র ২২ রান তুলতে পেরেছেন বিজয় শংকর ও কেদার যাদব। ম্যাচের অমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কোহলি এভাবে ফিরে না গেলে ভারতের রানটা ৩৫০ ছুঁতেই পারত।
এদিকে কোহলির এমন কাণ্ডে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ মজা নিয়েছেন দুই দেশের সমর্থকেরাই। এ ম্যাচকে উদ্দেশ্য করে স্টার স্পোর্টসের বানানো বিজ্ঞাপনের আদলে এক ভারতীয় সমর্থক টুইট করেছেন, ‘আমিরকে বাবা দিবসের উপহার দিয়ে গেলেন কোহলি।’ আবার এক পাকিস্তানি সমর্থক কোহলিকে খোঁচা মেরে টুইট করেছেন, ‘কোহলি বোধ হয় আমিরের বল আর খেলতে চাইছিল না। যে কারণে ডিআরএস না নিয়ে সে নিজেই ফিরে গেছে। একেই বলে ভয়।’ আরেক টুইটার ব্যবহারকারী টুইট করেছেন, ‘ফেয়ারপ্লে অ্যাওয়ার্ড জেতার জন্য কোহলি একটু বেশিই চেষ্টা করছে বোধ হয়!’