কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার চাঞ্চল্যকর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্র এরশাদুল ইসলাম চয়ন হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড এবং সাতজনের যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেককে পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার সকালে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (দ্বিতীয় আদালতের বিচারক) মোহাম্মদ আব্দুর রহিম এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আব্দুল আউয়াল (৩০), আল-আমিন (২৬) ও সুফল (২২)। এদের মধ্যে আল-আমিন ছাড়া বাকিরা পলাতক।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আব্দুল করিম (৪০), সাফিয়া খাতুন (৩৩), আব্দুল কাদির ফকির (৪৫), সোহেল (২৪), রিপা আক্তার (৩০), মোছা. জহুরা খাতুন ওরফে অনুফা (৪০) ও আব্দুর রউফ ফকির ওরফে রুপ মিয়া (৪০)। আসামি হিরা (৫০) বিচারকালীন অবস্থায় মারা গেছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ২ ডিসেম্বর পারিবারিক বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলার নিহত হন চয়ন।
চয়ন হোসেনপুর উপজেলার টানসিদলা গ্রামের জহিরুল ইসলাম রতনের ছেলে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স শেষ করে রেলওয়েতে স্টেশন মাস্টার হিসেবে নিয়োগ পান। ঘটনার দু’দিন পরই চাকরিতে যোগদান করার কথা ছিল চয়নের।
ঘটনার দিন দুপুরে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চয়নের বাড়িতে অতর্কিতে হামলা করে তার মা ও বোনকে পিটিয়ে আহত করে। এসময় তাদের রক্ষা করতে গেলে চয়নকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হোসেনপুর উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে ঘটনার দিন নয়জনকে আসামি করে হোসেনপুর থানায় মামলা করেন।
পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলা চলাকালে আসামি আমিনুল হক ওরফে হিরা মারা যাওয়ায় তাকে অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহতের মা মোমেনা খাতুন ও বাবা জহিরুল ইসলাম রতন।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম জানান, মামলার রায় সন্তোষজনক হওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. ইয়াকুব আলীকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করা হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি যজ্ঞেশ্বর রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
মামলার বিবাদী পক্ষের আইনজীবী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।