নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি যে ছয়টি আসন পেয়েছে সেগুলোও তাদের পাওয়ার কথা ছিল না।
কোথায় কোথায় বিএনপি আসনগুলো পেয়েছে তা নিয়ে আওয়ামী লীগ গবেষণা করছে জানিয়ে তিনি বলছেন, এই ‘দুর্বলতা’ তারা কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা করছেন।
গত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনে কামাল হোসেনের নেতৃত্ব জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ভোটে গিয়ে ভরাডুবি হয় বিএনপির। মাত্র ছয়টি আসনে জয় পাওয়া দলটির নেতারা বলছেন, নির্বাচনের আগের রাতে ‘ভোট ডাকাতি’ হয়েছে।
নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে প্রথমে তারা সংসদে না যাওয়ার ঘোষণা দিলেও শেষ মুহূর্তে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া বাকিরা শপথ নিয়েছেন।
বিএনপির সংসদ সদস্যদের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ বলেন, “বিএনপির সংসদ সদস্যরা জোর করে বলছেন, আমরা প্রকৃত বিরোধী দল। দুঃখজনক হল দেশের জনগণ তাদের বিরোধী দলের আসনও দেয়নি। বাস্তবতা হচ্ছে তাদের বিরোধী দলের আসনেও বসার কোনো সুযোগ নেই। সংসদে তারা একটি বিরোধী গ্রুপ হিসেবে অংশগ্রহণ করছে।”
নির্বাচনে মানুষ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সৌভাগ্যক্রমে নির্বাচনে বিএনপি যে ৫-৬টি আসন পেয়েছে এটা তাদের পাওয়ারও কথা ছিল না। এই ৫-৬টি আসন কোথায় পেল এটা নিয়ে আওয়ামী লীগ গবেষণা করছে। এই দুর্বলতা আমরা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করব।”
খালিদ মাহমুদ বলেন, “বিএনপি বলেছিল সংসদে যাবে না। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘ওরা আসবে, কারণ বিএনপি আদর্শিক রাজনৈতিক দল নয়। তারা ক্ষমতার রাজনীতি করে। তাদের আসতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রীর সেই কথা আজ সত্য হয়েছে। তারা নাকে খত দিয়ে এই সংসদে যোগ দিয়েছে। তারা মুখে এক কথা বলে ভেতরটা আরেক রকম। তারা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড রাজনীতি করে। এই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।”
বাজেটের সমালোচনাকারীদের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “বাজেট নিয়ে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে সমালোচনা হয়েছে আবার প্রশংসাও হয়েছে। বাজেটের ওপর যারা গবেষণা করেন তারা বাজেটকে সমালোচনা করে জনবিরোধী বলে আখ্যায়িত করেছেন। এই মানুষগুলোকে আমরা বার বার দেখি, বছরে এই দিনটার (বাজেট পেশ) জন্য তারা অপেক্ষা করে। কখন বাজেট পেশ করা হবে, কখন এটার সমালোচনা করবে। এরা অতিথি পাখির মতো। বাজেট যেদিন তারা সমালোচনা করেন। অথচ এই লোকগুলোকে দেখেছি ওয়ান ইলেভেনের সময় ঘরের মধ্যে বসে যখন বাজেট দেওয়া হয়েছিল তখন সেই বাজেটের প্রশংসা করতে। এই হচ্ছে তাদের চরিত্র।
“আর দুর্ভাগ্য যে, তারা নিজেদের সুশীল হিসেবে দাবি করেন। প্রজ্ঞাবান, বিদ্বান ও বিজ্ঞ হিসেবে দাবি করেন। তবে দেশের মানুষ তাদের প্রজ্ঞাবান ও বিজ্ঞবান মনে করে না। সুশীলও মনে করে না। বরং তারা যখনই জনগণের কাছে গেছেন তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। সামরিক জান্তার সহযোগিতা নিয়েও তারা টিকে থাকতে পারেনি। এদের বক্তব্য জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।”
অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, আওয়ামী লীগের মৃণাল কান্তি দাস, আবুল কালাম মো. আহসানুল হক, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, ফরিদুল হক খান, এম এ মতিন, প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, হাসান ইমাম খান, তামান্না নুসরাত বুবলী, রুহুল আমিন মাদানী, শামসুল হক টুকু, রুমানা আলী, বজলুল হক হারুন।