বিমানের হজ ফ্লাইট এবার নিজস্ব উড়োজাহাজে

biman-bangladesh-samakal-5d138fcc6aec6

নিজস্ব উড়োজাহাজে হজ ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। একই সঙ্গে ঢাকা-জেদ্দা রুটে চলাচলকারী নিয়মিত ফ্লাইটেও হজযাত্রী পরিবহন করা হবে। এর মাধ্যমে চলতি হজ মৌসুমে প্রায় ১০০ কোটি টাকা মুনাফার আশা করছে বিমান।

তবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বিমানের নিয়মিত রুটের ফ্লাইটে কাটছাঁট হতে পারে। তাতে নিয়মিত রুটের যাত্রী হারানোর শঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া হঠাৎ যান্ত্রিক ত্রুটি বা অন্য কোনো জটিলতায় ফ্লাইট সিডিউলেও বিপর্যয় ঘটতে পারে।

সংশ্নিষ্টরা বলছেন, বিমানের বহরে থাকা চারটি উড়োজাহাজ দিয়ে হজ ফ্লাইট পরিচালনা করলে কাটছাঁট করতে হবে নিয়মিত ফ্লাইট। এতে নিয়মিত সিডিউল বিপর্যস্ত হবে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ফ্লাইট বিলম্বিত কিংবা উড়োজাহাজ অচল হলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে।

এদিকে সৌদি আরব এবার হজ ফ্লাইটের জন্য বাড়তি স্লট দেবে না। তাই কোনো ফ্লাইট বাতিল হলে পুরো কার্যক্রম বিপর্যস্ত হতে পারে।

বিমানের সাবেক প্রকৌশলী ইফতেখারুল আলম বলেন, নিজস্ব উড়োজাহাজ দিয়ে এত বিপুলসংখ্যক হজযাত্রী পরিবহন করতে নিয়মিত ফ্লাইটে কাটছাঁট করতে হয়। এতে সিডিউল বিপর্যয় হয়। তখন মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের ফ্লাইটে কাটছাঁট করতে হবে। চারটি উড়োজাহাজের ওপর ভরসা করে হজ ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা সঠিক হয়নি। কারণ প্রায় প্রতিদিন বিমানের উড়োজাহাজে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যাচ্ছে। এতে ফ্লাইট বিলম্বিত হচ্ছে। জেদ্দা বিমানবন্দর এবার বিলম্বিত ফ্লাইট গ্রহণ করবে না।

পুরানা পল্টনের এভিয়েশন এজেন্সির মালিক আশরাফুল আলম টিটু বলেন, হজ মৌসুমে নিয়মিত ফ্লাইট কাটছাঁট করলে সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বিমানের কোনো উড়োজাহাজে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে পরিস্থিতি আরও অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছায়। এর আগে হজ মৌসুমে ফ্লাইট সংকটের কারণে সাধারণ যাত্রীদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে ১০ থেকে ১৭ ঘণ্টা দেরি হওয়ার নজিরও রয়েছে। হজযাত্রীদেরও সৌদি আরব পৌঁছাতে দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত দেরি হয়েছে। এ নিয়ে নানা তিক্ত অভিজ্ঞতাও হয়েছে সংশ্নিষ্টদের।

তবে বিমানের উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকারের দাবি, বিশেষ কোনো সংকট ছাড়া হজ ফ্লাইটে জটিলতার আশঙ্কা নেই। তিনি জানান, হজযাত্রী পরিবহনের জন্য বিমানের নিজস্ব চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর উড়োজাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুই মাসে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে হজ, নিয়মিতসহ মোট ৩৬৫টি ফ্লাইট পরিচালিত হবে। নিয়মিত ফ্লাইটেও হজযাত্রীরা জেদ্দা যেতে পারবেন। এ বছর বিমান অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পাচ্ছে না।

বিমানের প্রথম হজ ফ্লাইট শুরু হচ্ছে ৪ জুলাই। প্রথম ফ্লাইটে ঢাকা থেকে জেদ্দা যাবেন ৪১৯ জন হজযাত্রী। এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করতে সৌদি আরব যাবেন। তাদের মধ্যে বিমানের ফ্লাইটে যাবেন ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন। বাকিরা যাবেন সাউদিয়া এয়ারলাইন্সে। ফিরতি হজ ফ্লাইট ১৭ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ১৪ সেপ্টেম্বর।

Pin It