দারুণ বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে কম রানে থামিয়ে আসল কাজটা করেছিলেন বোলাররা। ব্যাটিংয়ে বাকিটা সেরেছেন হাশিম আমলা ও ফাফ দু প্লেসি। একপেশে ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে এনে দিয়েছেন সহজ জয়।
চেস্টার-লি-স্ট্রিটের দা রিভারসাইড ডারহামে শুক্রবার ৯ উইকেটে জিতেছে দু প্লেসির দল। ২০৪ রানের লক্ষ্য ৭৬ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় তারা।
শ্রীলঙ্কার প্রায় সব ব্যাটসম্যান ভালো শুরু পেলেও ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস, ক্রিস মরিসদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে ইনিংস বড় করতে পারেননি। তিন বল বাকি থাকতে ২০৩ রানে গুটিয়ে যায় সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ইনিংস। টুর্নামেন্ট জুড়ে নিজের ছায়া হয়ে থাকা আমলার ব্যাটে মিলল ছন্দে ফেরার আভাস, চমৎকার এক ইনিংস খেললেন অধিনায়ক দু প্লেসি। দক্ষিণ আফ্রিকা পেল দ্বিতীয় জয়।
সেমি-ফাইনালের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রোটিয়ারা যেন খুঁজে পেল নিজেদের। তাদের কাছে এই হারে শেষ চারের পথ অনেক কঠিন হয়ে গেল শ্রীলঙ্কার। ৭ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৬, এক ম্যাচ বেশি খেলা দক্ষিণ আফ্রিকার ৫।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই বড় একটা ধাক্কা খায় শ্রীলঙ্কা। দারুণ এক ডেলিভারিতে অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নেকে ফিরিয়ে দেন কাগিসো রাবাদা। সেই ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে দ্রুত এগিয়ে নেন কুসল পেরেরা ও আভিশকা ফার্নান্দো। তবে আগের ম্যাচের মতো এবারও সম্ভাবনাময় ইনিংস বড় করতে পারেননি ফার্নান্দো। তাকে থামিয়ে ৬৭ রানের জুটি ভাঙেন প্রিটোরিয়াস।
লুঙ্গি এনগিডির জায়গায় দলে ফেরা এই পেসার পরের ওভারে বোল্ড করে দেন ছন্দে থাকা কুসল পেরেরাকে। থিতু হওয়া কুসল মেন্ডিসকেও বিদায় করেন প্রিটোরিয়াস। ২৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তিনিই দলের সেরা বোলার।
মিডল অর্ডার টানতে পারেনি লঙ্কানদের। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, জিবন মেন্ডিস, থিসারা পেরেরা, ইসুরু উদানা বিদায় নেন দুই অঙ্কে গিয়ে। দ্বিতীয় উইকেট জুটির পর আর কোনো পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি পায়নি শ্রীলঙ্কা।
প্রথম নয় ব্যাটসম্যানের আট জন পৌঁছান দুই অঙ্কে। তাদের কেউ ৩০ ছাড়াতে পারেননি। সর্বোচ্চ ৩০ রান আসে কুসল পেরেরা ও ফার্নান্দোর ব্যাট থেকে।
লাসিথ মালিঙ্গাকে ফিরিয়ে ৩ বল বাকি থাকতে লঙ্কানদের গুটিয়ে দেন মরিস। ৪৬ রানে ৩ উইকেট নেন এই অলরাউন্ডার। পেসার রাবাদা ২ উইকেট নেন ৩৬ রানে।
ছোট রান তাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা শুরুতেই হারায় কুইন্টন ডি কককে। দারুণ এক ইয়র্কারে বাঁহাতি এই ওপেনারকে বোল্ড করে দেন মালিঙ্গা। তবে এটাই হয়ে থাকে শ্রীলঙ্কার শেষ সাফল্য।
দ্বিতীয় উইকেটে আমলার সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ১৭৫ রানের জুটিতে ম্যাচ শেষ করে দেন দু প্লেসি। অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যানকে খুব একটা ভোগাতে পারেননি শ্রীলঙ্কার বোলাররা। প্রায় এক ছন্দে খেলে যান আমলা। থিতু হয়ে যাওয়ার পর রানের গতি বাড়ান দু প্লেসি।
৬৮ রানে আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর অধিনায়কের পরামর্শে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়া আমলা অপরাজিত থাকেন ৮০ রানে। তার ১০৫ বলের দায়িত্বশীল ইনিংস গড়া পাঁচ চারে। চার হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেওয়া দু প্লেসি করেন ৯৬ রান। তার ১০৩ বলের দাপুটে ইনিংস গড়া ১০ চার ও এক ছক্কায়।
দারুণ বোলিংয়ে ৩ উইকেট নেওয়া প্রিটোরিয়াস জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ৪৯.৩ ওভারে ২০৩ (করুনারত্নে ০, কুসল পেরেরা ৩০, ফার্নান্দো ৩০, কুসল মেন্ডিস ২৩, ম্যাথিউস ১১, ডি সিলভা ২৪, জিবন মেন্ডিস ১৮, থিসারা ২১, উদানা ১৭, লাকমল ৫*, মালিঙ্গা ৪; রাবাদা ১০-২-৩৬-২, মরিস ৯.৩-০-৪৬-৩, প্রিটোরিয়াস ১০-২-২৫-৩, ফেলুকোয়ায়ো ৮-০-৩৮-১, তাহির ১০-০-৩৬-০, দুমিনি ২-০-১৫-১)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৩৭.২ ওভারে ২০৬/১ (ডি কক ১৫, আমলা ৮০*, দু প্লেসি ৯৬*; মালিঙ্গা ১০-১-৪৭-১, ডি সিলভা ৪-০-১৮-০, লাকমল ৬-০-৪৭-০, থিসারা পেরেরা ৫.২-১-২৮-০, জিবন মেন্ডিস ৭-০-৩৬-০, উদানা ৫-০-২৯-০)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ:ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস