২০২১ সালের ডাভোস সম্মেলনে বাংলাদেশকে প্রধান ফোকাস হিসেবে তুলে ধরবে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এবং তার আগের বছর সংস্থাটি ঢাকায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক জানিয়েছেন।
তাদের এই সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশের জন্য ‘বিরাট অর্জন’ বলছেন পররাষ্ট্র সচিব।
মঙ্গলবার চীনের ডালিয়ান কনফারেন্স সেন্টারে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লস সয়াবের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান তিনি।
বৈঠকের পর পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের বলেন, “সয়াব বলেছেন যে, বাংলাদেশকে ফোকাস করে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম কিছু করবে। তখন দুইজনের মধ্যে আলোচনার ফলশ্রুতিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে ২০২০ সালে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম বাংলাদেশে একটা ইভেন্ট করবে। পরের বছর ২০২১ সালে ডাভোসে বাংলাদেশকে ফোকাস করে একটা বড় ইভেন্ট হবে।”
ক্লস সয়াব ২০২০ সালে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন জানিয়ে সচিব বলেন, “উনি নিজে থেকে বলেছেন, আমি বাংলাদেশে যাব। ২০২১-এ ডাভোসে দেশ হিসেবে মেইন ফোকাস হবে বাংলাদেশ। এটা একটা বিরাট অ্যাচিভমেন্ট। এটা সহজে আসে না।
“আমি মনে করি যে, এটা খুবই অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক যে, ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম বাংলাদেশকে, বঙ্গবন্ধুকে ফোকাস করতে চাচ্ছে।”
ধনী ও ক্ষমতাধরদের আলোচনা সভা হিসেবে পরিচিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ২০১৭ সালের বার্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা অংশগ্রহণ করেন।
শেখ হাসিনা ও ক্লস সয়াবের বৈঠকে আগামী অক্টোবরে দিল্লিতে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের সাউথ এশিয়া ফোরামে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী আলোচনা করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শহীদুল হক বলেন, “আগামী তিন থেকে চার অক্টোবর দিল্লিতে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের সাউথ এশিয়া ফোরাম হবে। সেখানে একটা সেশনে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদীকে রেখে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে সেশনের প্রস্তাব করেছেন সয়াব।
“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এটা গ্রহণ করেছেন এবং আমরা এটা নিয়ে কাজ শুরু করেছি।”
বৈঠকে আলোচনার বিষয় তুলে ধরে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “অধ্যাপক ক্লস সয়াব প্রথমেই বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, আপনার দূরদর্শিতা ও বুদ্ধিদীপ্ত নীতি নির্ধারণ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। এর ফলেই প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে।
“উনি বলেছেন, এটা বিস্ময়ের কথা যে, সম্পদের এত অপ্রতুলতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ যে এই ধরনের উন্নয়ন করে এটা আসলেই একটা বিস্ময়কর ব্যাপার।”
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় শেখ হাসিনাকে প্রশংসা করে সয়াব বলেছেন, “এই প্ল্যাটফর্মে বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করে থাকি এবং ভবিষ্যতে আপনিও এই প্ল্যাটফর্মকে এ ইস্যুতে ব্যবহার করতে পারবেন।”
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী ভাসানচরের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেছেন, আমরা দ্বিপাক্ষিকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতারও দরকার আছে।”
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।