বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, ‘আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করতে সুচতুরভাবে বিচার বিভাগকেও দলীয়করণ করছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বলতে এখন কিছু নেই, একে সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে। জনগণের শেষ আশ্রয়স্থল এই বিচার বিভাগকে দলীয়করণের মাধ্যমে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে তারা।’
সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, পাবনার ঈশ্বরদীতে ১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনের ওপর হামলাসংক্রান্ত মামলায় নিম্ন আদালতের দেওয়া রায় বিচার ব্যবস্থার একই চিত্র তুলে ধরেছে। এই মামলার রায়ে ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১৩ জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের শাস্তি দেওয়ার আদেশ সমগ্র জাতিকে বিস্মিত, হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এ ধরনের ঘটনাগুলো রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সংবিধান সংশোধন সম্পর্কিত রায়ে পরিস্কারভাবে বলেছেন, বিচার ব্যবস্থা দলীয়করণের শিকার হয়েছে। জনগণ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নিম্ন আদালতে আইন মন্ত্রণালয়ের নিরঙ্কুশ প্রভাব নিশ্চিত করা হয়েছে এবং ন্যায় বিচার তিরোহিত হচ্ছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বিলুপ্ত হচ্ছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলায় এই বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণের নির্বাচিত সংসদ ও সরকার গঠনের লক্ষ্যে অবিলম্বে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানাচ্ছি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, পাবনায় ট্রেনে হামলার ঘটনায় কারো মৃত্যু হয়নি। তারপরও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। যেখানে কোনো মৃত্যু ঘটে নাই, কোনো হত্যা ঘটে নাই, সেখানে মৃত্যুদণ্ড! তাও একজন নয়, নয় জনের। এ রায়ের মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয়েছে, দেশের বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। দেশে আইনের শাসন বলে কোনো কিছু নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।