যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের নেতা নির্বাচিত হয়েছেন বরিস জনসন। এর মাধ্যমে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন তিনি।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর পৌনে ১২টার দিকে দলীয় নেতা নির্বাচনে বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্টকে লন্ডনের সাবেক মেয়র জনসন বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারান বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) নানা সমীকরণের প্যাঁচে পড়ে প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’কে সরে দাঁড়াতে হচ্ছে; বুধবার তার জায়গায় নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন বরিস জনসন।
এর আগে সোমবার বিকেল পর্যন্ত জেরেমি হান্ট ও বরিস জনসন- এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে একজনকে জয়ী করতে ভোট দেন যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির নিবন্ধিত সমর্থকরা।
এর মধ্যে ৯২ হাজার ১৫৩ ভোট পেয়ে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন বরিস জনসন। আর ৪৫ হাজার ৫৯৭ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন ব্রিটেনের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি ভোট পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৬৫৬টি।
মঙ্গলবার শেষ দিনের মতো পূর্ণ কর্মদিবস দায়িত্ব পালন করবেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। পরদিন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে দেখা করে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের পদত্যাগপত্র দেবেন তিনি।
ইতোমধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী।
এক টুইট বার্তায় মে বলেন, ‘কনজারভেটিভদের নেতা নির্বাচিত হওয়ায় বরিস জনসনকে অনেক অভিনন্দন। এখন আমাদের সবাইকে মিলে ব্রেক্সিট ইস্যুতে এমনভাবে কাজ করতে হবে যেন তা সর্বোচ্চ ফলপ্রসূ হয়।’
জনসনের বিজয়ী হওয়ার খবর প্রকাশের পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য বরিস জনসনকে শুভেচ্ছা। তিনি অসাধারণ হবেন।’
ব্রেক্সিট ইস্যুতে নিজের নতুন পরিকল্পনা তার মন্ত্রিসভায় এবং পার্লামেন্টে অনুমোদিত হবে না, এটা স্পষ্ট হবার পর গত ২৪ মে কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তেরেসা মে। লন্ডনে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের সামনে এক আবেগঘন বক্তৃতায় পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার সময় মে’র চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে।
ব্রেক্সিট ইস্যুকে কেন্দ্র করে ডেভিড ক্যামেরন প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের পর ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন তেরেসা মে। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ব্রেক্সিট কার্যকরে বিভিন্ন উদ্যোগ নেন তিনি। তবে এ বিষয়ে তার কোনো প্রস্তাবেই অনুমোদন দেয়নি পার্লামেন্ট।
কোন প্রক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য আলাদা হবে সে পথ বের করার জন্য ২১ মাস সময় পেয়েছিলেন মে। তবে তার পরিকল্পনা পার্লামেন্টে পাস না হওয়ায় ব্রেক্সিটের সময়সীমা ৩১ অক্টোবার পর্যন্ত তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এরই মধ্যে নিজ দলে বিদ্রোহের মুখে পড়েন তেরেসা।
তেরেসার দায়িত্ব পালনের নির্ধারিত সময় ছিল ২০২০ সাল পর্যন্ত। তাই বাকিটা সময় ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জনসকেই ব্রেক্সিট ইস্যুতে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে্ ।