ঢাকা ওয়াসাকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আমাদের দরকার বিশুদ্ধ পানি। আমরা অতশত বুঝি না, বিশুদ্ধ পানি চাই। যদি তারা (ওয়াশা) তা নিশ্চিত করতে পারে, তা ভালো।’
বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
ঢাকা ওয়াসার বিভিন্ন জোন থেকে সংগৃহীত পানির আট নমুনায় ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ বিষয়ে ওয়াসার বক্তব্য দাখিলের জন্য সময় চাওয়া হলে আদালত আইনজীবীদের উদ্দেশে এ কথা বলেন।
এ বিষয়ে আগামী ৩০ জুলাই পরর্বতী শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।
আদালতে বুধবার শুনানি করেন ওয়াসার আইনজীবী এএম মাসুম। অন্যদিকে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
এর আগে আদালতের আদেশ অনুসারে গঠিত চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটি বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আইসিডিডিআরবির পরীক্ষাগারে পানির নমুনা পরীক্ষা করে এক প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনটি ৭ জুলাই আদালতে দাখিল করা হয়।
গত ৩ জুলাই ঢাকা ওয়াসার ১০টি মডস জোনের মধ্যে চারটি এবং সায়েদাবাদ ও চাঁদনীঘাট এলাকা থেকে সংগৃহীত আটটি নমুনার পানিতে দূষণের তথ্য-সংক্রান্ত প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে জমা দেয়া হয়।
প্রতিবেদনে এসব এলাকার পানিতে ব্যাকটেরিয়া, উচ্চমাত্রার অ্যামোনিয়া পাওয়া গেছে এবং কিছু কিছু নমুনাতে মলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে তথ্য উঠে আসে।
তারও আগে গত ২১ মে এক আদেশে ঢাকা ওয়াসার পানির উৎস, ১০টি বিতরণ জোন, গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ১০টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এবং দৈবচয়নের ভিত্তিতে ১০টি স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে, তা পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় ৩৪টি স্থান থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে তা আইসিডিডিআরবি, বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে আটটি নমুনাতে দূষণ পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনের ভাষ্য, উৎসসহ ঢাকা ওয়াসার বিভিন্ন জোন থেকে সংগৃহীত পানির ৩৪টি নমুনার মধ্যে আটটিতে ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ পাওয়া গেছে। এই দূষণ রোধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলেও কমিটির সুপারিশে বলা হয়। সেদিন শুনানি নিয়ে আদালত এই প্রতিবেদনের বিষয়ে হলফনামা আকারে বক্তব্য ওয়াসাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ২৪ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার বিষয়টি আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে।