ঢাকায় ফের এ কে-২২ উদ্ধার গ্রেফতার ৩

Untitled-135-5d3caac62fba9-5d3cbb0294e47

রাজধানী থেকে ফের উদ্ধার হলো মাঝারি ধরনের ভারী আগ্নেয়াস্ত্র এ কে-২২ রাইফেল। খিলগাঁওয়ের একটি বাসায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এই অস্ত্র পায়। একই বাসায় মেলে চারটি পিস্তল ও একটি রিভলবারসহ ৪৭ রাউন্ড গুলি। সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয় তিন ব্যক্তিকে। গত শুক্রবার রাতে ডিবি-পূর্ব বিভাগের একটি টিম এ অভিযান চালায় বলে ডিবি পুলিশ জানিয়েছে।

গ্রেফতার তিনজন হলো খান মো. ফয়সাল (৩৮), জিয়াউল আবেদীন ওরফে জুয়েল (৪৫) ও জাহেদ আল আবেদীন ওরফে রুবেল (৪০)। তাদের মধ্যে জুয়েল ও রুবেল আপন ভাই। ডিবি কর্মকর্তারা বলছেন, ওই তিনজন  ছাড়াও অভিযানের সময় আরও অন্তত সাতজন পালিয়ে গেছে। সন্ত্রাসী দলের এই সদস্যরা ভাড়াটে খুনি হিসেবে রাজধানীতে হত্যাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়।

এর আগে চলতি মাসের ১ জুলাই পুরান ঢাকার স্বামীবাগ এলাকা থেকে একটি এ কে-২২সহ দুই সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছিলেন কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের আর্মস এনফোর্সমেন্ট টিমের সদস্যরা। এক মাসের মধ্যেই ঢাকাতে উদ্ধার হলো আরেকটি এ কে-২২। গত শুক্রবার খিলগাঁওয়ের অভিযানে পাঁচটি ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্র মিললেও চলতি সপ্তাহেই গত শুক্রবার পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়ায় চারটি পিস্তল ও দুটি রিভলবারসহ তিন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এর আগে ২০১৬ সালে হলি আর্টিসান বেকারিতে নৃশংস হামলায় এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করে জঙ্গিরা। তবে চলতি মাসে উদ্ধার হওয়া দুই অস্ত্রের সঙ্গে এখনও জঙ্গি সম্পৃক্ততার তথ্য মেলেনি।

খিলগাঁও থেকে এ কে-২২সহ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের তথ্য জানিয়ে গতকাল শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন ডিবি কর্মকর্তারা। সেখানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, ‘উদ্ধার করা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে গ্রেফতার তিন সন্ত্রাসী তাদের পলাতক সহযোগীদের নিয়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে কাজ করত। এ ছাড়া চাঁদাবাজি ও ছিনতাই চক্র নিয়ন্ত্রণ করত তারা। তবে ভাড়ায় হত্যা করাই তাদের প্রধান কাজ ছিল।’

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে একটি চক্র ডাকাতি, প্রভাব বিস্তার ও কোরবানির পশুর হাটকেন্দ্রিক মোটা অঙ্কের চাঁদাবাজি করে থাকে। ওই চক্রের সঙ্গেও গ্রেফতার চক্রের যোগসাজশ রয়েছে। আদালতে হাজির করে তাদের রিমান্ডে নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

ডিবির অপর এক কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার ও পলাতক সন্ত্রাসীরা সবাই বিদেশে অবস্থানরত এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর গ্রুপের সদস্য। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার তিনজন জানিয়েছে, পলাতক আসামি ললাট অস্ত্রগুলো ওই ফ্ল্যাটে রাখতে দিয়েছিল। তার নির্দেশে তারা ঢাকায় দুই ব্যক্তিকে হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ওই ফ্ল্যাটে অবস্থান করছিল।

ওই কর্মকর্তা বলেন, তিনজনকে গতকাল আদালতে হাজির করা হয়। চার দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে তাদের প্রত্যেককে। পলাতক ললাটসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

পাঁচটি ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্রসহ এ কে-২২ উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার (পূর্ব) শাহিদুর রহমান বলেন, ‘গোপন খবরের ভিত্তিতে খিলগাঁও থানার সিপাহীবাগ এলাকার ২৬৯/এ/ক নম্বর বাড়ির নিচ থেকে গ্রেফতার করা হয় খান মো. ফয়সালকে। তার দেহ তল্লাশি করে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। ওই সন্ত্রাসীকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ওই বাড়ির অষ্টম তলার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তলসহ জুয়েল ও রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ওই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফ্ল্যাটের বাথরুমের ওপরের স্টোর থেকে ব্যাগে থাকা এ কে-২২ রাইফেল, একটি পিস্তল ও একটি রিভলবারসহ গুলি উদ্ধার করা হয়।

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, অভিযানের সময় ওই ফ্ল্যাট থেকে অন্তত সাত সন্ত্রাসী পালিয়ে যায়। গ্রেফতার তিনজনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী পলাতক সন্ত্রাসীরা হলো এসএম ওমর ফারুক ওরফে ললাট, আনিচ, মিঠু, মামুন, মঈন, তারিফ ও অনিক।

Pin It