রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কেউ ভিআইপি নন বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
মাদারীপুর কাঠালবাড়ি ফেরিঘাটে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার এক রিট আবেদনের শুনানিতে এ মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।
এসময় অতিরিক্ত সচিবের নিচে নন, এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে ওই ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
জনপ্রশাসন সচিবের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলেন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
শুনানিতে ভিআইপি প্রটোকল বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কেউ ভিআইপি নন, বাকিরা সবাই রাষ্ট্রের কর্মচারী।
শুনানিতে হাইকোর্ট আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয় থাকে, সেটি বিবেচনা করতে হয়।
একই সঙ্গে তিতাসের মৃত্যুর বিষয়ে দেওয়া রুলে তার পরিবারকে কেন তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চান হাইকোর্ট। আগামী ২৮ আগস্ট এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য রাখেন আদালত।
বুধবার আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. জহির উদ্দিন লিমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
নড়াইল কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তিতাস ঘোষ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হলে তাকে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভাড়া করা একটি আইসিইউ সম্বলিত অ্যাম্বুলেন্সে বৃহস্পতিবার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির উদ্দেশে রওনা দেন পরিবারের লোকজন।
ওইদিন রাত ৮টার দিকে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌ-রুটের মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ১ নম্বর ভিআইপি ফেরিঘাটে পৌঁছায় অ্যাম্বুলেন্সটি। তখন কুমিল্লা নামে ফেরিটি ঘাটে যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। এ সময় সরকারের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল পিরোজপুর থেকে ঢাকা আসবেন বলে ওই ফেরিকে অপেক্ষা করতে ঘাট কর্তৃপক্ষকে বার্তা পাঠানো হয়।
তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফেরিতে ওঠে অ্যাম্বুলেন্সটি। কিন্তু এর মধ্যে মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায় তিতাস। এ ঘটনা তদন্তে সোমবার তিনটি কমিটি গঠন করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিতাসের মৃত্যু নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় চলছে।