ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে। এক দিনে এত মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। এ নিয়ে চলতি মাসে প্রথম পাঁচ দিনেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়াল। সোমবারও ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ডেঙ্গুতে ৭৫ জনের মৃত্যু হলো।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সারাদেশে নতুন করে দুই হাজার ৬৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় এক হাজার ১৫৯ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন এলাকায় ৯০৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। রোববার এ সংখ্যা ছিল এক হাজার ৮৭০ জন। চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২৭ হাজার ৪৩৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৭৬১ জন ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। হাসপাতালে বর্তমানে সাত হাজার ৬৫৮ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে রাজধানী ঢাকার ৩৮ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চার হাজার ৯৬২ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় দুই হাজার ৬৯৬ জন ভর্তি রয়েছেন।
সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে হাসান নামে এক শিশু, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আবহাওয়াবিদ নাজমুল হকের স্ত্রী শারমিন আক্তার শাপলা, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রিপন হাওলাদার, খুলনার সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খাদিজা বেগম, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার তৃষা মনি নামে এক শিশু রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এবং ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার বাসিন্দা অথৈ সাহা নামে এক স্কুলছাত্রীর রাজধানীর ধানমণ্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। তবে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সোমবারের ছয়জনসহ এ পর্যন্ত ৭৫ জনের মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছে।
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেলে ৫৭০, মিটফোর্ডে ৪৩৬, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১৪৫, সোহরাওয়ার্দীতে ৩৯৫, হলি ফ্যামিলিতে ২০৪, বারডেমে ৬৯, বিএসএমএমইউতে ১৬১, পুলিশ হাসপাতালে ১৩৯, মুগদায় ৪৪৭, বিজিবি হাসপাতালে ২৮, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১৮৩, কুর্মিটোলায় ৩২৮, বাংলাদেশ মেডিকেলে ১৫৫, ইবনে সিনায় ৯৫, স্কয়ারে ১০৯, কমফোর্টে ১৪, শমরিতায় ৪৮, ল্যাবএইডে ১১১, হাই কেয়ারে ৪৪, হেলথ অ্যান্ড হোপে ১৮, গ্রিন লাইফে ৮২, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ১০২, ইউনাইটেডে ৮৬, খিদমায় ২৩, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেলে ৬২, সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলে ১০৮, এ্যাপোলোতে ৯৫, আদ-দ্বীনে ১১৭, ইউনিভার্সেল মেডিকেলে ৬৩, বিআরবি হাসপাতালে ৩৬, আজগর আলীতে ৬৭, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৪৬, উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে ৮৬, সালাউদ্দিনে ৪৯, পপুলারে ৬২, উত্তরা ক্রিসেন্টে ৩০, আনোয়ার খান মর্ডানে ৮৯ জনসহ চার হাজার ৯৬২ রোগী ভর্তি রয়েছেন।
এ ছাড়া রাজধানীর বাইরে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ৪৩৮, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৩৫, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫২৫, খুলনা বিভাগে ৫২১, রাজশাহী বিভাগে ৩৮৯, রংপুর বিভাগে ২০৯, বরিশাল বিভাগে ২৮৯, সিলেট বিভাগে ৯০ জনসহ মোট দুই হাজার ৬৯৬ জন চিকিৎসাধীন আছেন।