বৃষ্টির মধ্যে ঢাকার গ্রিন রোডের ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গ্রিন লাইফ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।
পলাশ দে (২৪) নামের এই নবীন চিকিৎসক দেড় মাস আগে গ্রিন লাইফ হাসপাতালে চাকরি নিয়েছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের প্রাণনাথপুর গ্রামে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে কিছু দূর এগিয়ে গিয়ে পলাশ তড়িতাহত হন বলে গ্রিন লাইফ হাসপাতালের নির্বাহী কর্মকর্তা মাইনুল ইসলাম জানান।
তিনি বলেন, ডা. পলাশ হাসপাতালের ডিউটি শেষ করে বেলা ৩টার দিকে রাস্তা পার হয়ে গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের পাশ দিয়ে ব্যাংকে বেতন তুলতে যাচ্ছিলেন।
“ফুটপাত দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় কোনো কারণে তিনি বিদ্যুতের খুঁটি স্পর্শ করেন। সাথে সাথে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছিটকে যান,” প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে বলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রবল বৃষ্টিতে পানি জমে যায় ঢাকার অনেক সড়কে, গ্রিন রোডে জলাবদ্ধতার মধ্যে বিদ্যুতের খুঁটি ধরে তড়িতাহত হয়ে প্রাণ হারালেন চিকিৎসক।
ঘটনা সম্পর্কে কলাবাগান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান বলেন, “রাস্তায় পানি জমে যাওয়ায় পলাশ দে একটি দোকানের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় কলাপসিবল গেট ধরার সাথে সাথে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।”এদিকে পলাশ দের খালা ও গ্রিন লাইফ হাসপাতালের নার্স বিউটি রানী বলছেন, রাস্তায় ঝুলে থাকা একটি বিদ্যুতের তারের সঙ্গে স্পর্শ হলে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।
স্থানীয়রা উদ্ধার করে পলাশকে প্রথমে গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা চিকিৎসা চলার এক পর্যায়ে পরিচয় নিশ্চিত হলে দ্রুত তাকে গ্রিন লাইফ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেখানেই বিকাল ৫টার দিকে পলাশের মৃত্যু হয় বলে জানান মাইনুল ইসলাম।
তিনি জানান, গ্রিন লাইফ হাসপাতালের আইসিইউতে দায়িত্ব পালন করছিলেন ডা. পলাম। অবিবাহিত পলাশ হাসপাতালের পাশেই একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন।
বিউটি রানী জানান, পলাশ ২০১৭ সালে বগুড়া মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করার পর সেখানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি নেন। উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়ার জন্য কিছুদিন আগে ঢাকায় আসেন তিনি।
“আমার অনুরোধে দেড় মাস আগে এই হাসপাতালে যোগদান করে। আগে ১৫ দিনের বেতন তুলেছে। এবারই প্রথম পুরো মাসের বেতন তুলতে সে হাসপাতাল থেকে বের হয়।”
সিরাজগঞ্জে তাঁতের ব্যবসা রয়েছে পলাশের বাবার। তার একমাত্র ভাই ভারতে লেখাপড়া করেন।