ঋণ কেলেঙ্কারিতে আলোচিত হল-মার্ক গ্রুপ সব টাকা শোধ করবে এবং দায়মুক্ত হয়ে আবার তারা ব্যবসায় ফিরে আসবে বলে আশা করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বুধবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ১০ বছর মেয়াদে ঋণ পুনঃতফসিল করার যে সুযোগ সরকার ঋণ খেলাপিদের দিয়েছে, তার আওতায় হল-মার্ক গ্রুপ নতুন করে ব্যবসা শুরুর জন্য সরকারের সহায়তা চেয়েছে বলে খবর এসেছে সংবাদমাধ্যমে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, “হল-মার্ক টাকা দেবে। সবাই টাকা দেবে, এটা বিশ্বাস রাখেন। তারা আবার ব্যবসায় ফিরবে, সবাই ব্যবসায় ফিরবে।
“আমি নতুন করে ব্যবসায়ী সৃষ্টি করতে পারব না। যারা আছে এদেরকে দিয়েই ব্যবসা করতে হবে। আমি চাই আমার টাকাটা দিয়ে দিক, সুন্দরভাবে জীবন-যাপন করুক। তবে হল-র্মাক টাকা দেবে।”
হল-মার্ককে সরকার ওই সুযোগ দেবে কিনা জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল বলেন, “হল-র্মাক ব্যবসা করবে, তার আগে আমাদের টাকা তাদের শোধ করতে হবে। সেই টাকা দিলে আমরা তাদের টাকা দেব। তাদের সেই সক্ষমতা আছে। ব্যবসায়ীরা কখনও শেষ হয়ে যায় না। বর্ষাকাল একটা সিজন আছে, ব্যবসায়ীরা সব সময় সেটা মাথায় রেখেই কাজ করে।”
২০১০ থেকে ২০১২ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে অনিয়মের মাধ্যমে হল-মার্ক গ্রুপের আড়াই হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার ঘটনা প্রকাশ পেলে ব্যাপক শোরগোল ওঠে।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান ও তদন্ত চালিয়ে ২০১২ সালে মোট ১১টি মামলা করে দুদক। এসব মামলার সবগুলোতেই হল-মার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ এবং তার স্ত্রী কোম্পানির চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামকে আসামি করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো টাকাই ফেরত পায়নি সোনালী ব্যাংক।
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, “হল-মার্কের ফ্যাক্টরি অচল হলেও তার নিচে যে গোল্ড মাইন আছে (জমি) সেটা কী করবেন? নতুন অ্যারেজমেন্ট যখন হবে তখন জানতে পারবেন। আজ আর এ বিষয়ে কিছু বলতে চাইছি না।”
বিপিএল নিয়ে ‘ভুল’
ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগ বিপিএল এ বছর ‘হচ্ছে না’ বলে যে মন্তব্য আগের দিন অর্থমন্ত্রী করেছিলেন, তা ভুল ছিল বলে বুধবার স্বীকার করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বিপিএল হবে না এই মুহূর্তে এটা আমি বলতে পারব না। এটা বিসিবিকেই বলতে হবে। আমার বিশ্বাস, আইসিসির সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু না থাকলে অবশ্যই বিবিসিবি বিপিএলের আয়োজন করবে। আর বিপিএল করলে আমরা সেখানে থাকব।”
বিসিবির সাবেক সভাপতি মুস্তফা কামাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বিসিবির সঙ্গে বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের চুক্তি অনুযায়ী এক বছরে দুইবার বিপিএল আয়োজন সম্ভব নয়। ফলে এ বছর আর বিপিএলের আসর বসার সুযোগ নেই।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন দেশের বাইরে থাকায় অন্য কর্মকর্তারা কেউ অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে এক বছরে দুইবার বিপিএল করতে নিয়মে যে বাধার কথা অর্থমন্ত্রী বলেছেন, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন কেউ কেউ।
বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “বিপিএল হবে না সেটা বলেছিলাম… আমি ক্রিকেট থেকে অনেক দূরে। আমার ভুলভ্রান্তি হতে পারে। আমরা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ফ্রাঞ্চাইজি নিয়ে বিপিএলে অংশ নেই। সেখানে বিদেশি প্লেয়ার প্রয়োজন হয়, সেখানে যা যা লাগে তার জন্য আমার একজন ফ্রেইন্ড আছে।
“তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম তুমি কতটুকু রেডি। সে আমাকে জানায় এবার বিপিএল করতে পারবা না। কেন পারব না জানতে চাইলে সে জানায় এক বছরে দুটি বিপিএল হয় না, তোমরা একটি করে ফেলেছ। সেটা বিশ্বাস করে ঘটনার ভিতরে না গিয়ে বলেছি এ বছর বিপিএল হবে না।”
অর্থমন্ত্রী বলেন, “বিসিবির এক নম্বর ও দুই নম্বর ব্যক্তি দেশে নাই। আমার যিনি প্রাইভেট সেক্রেটারি হিসাবে কাজ করেন, তাকে ফোন করে জেনেছি, এরকম একটা সিদ্ধান্ত আসছিল। সেজন্যই আমার যে লোক সে ভেবেছিল এবার বিপিএল করতে দেবে না, সেখানে একটি ভুল বোঝাবুঝি ছিল। রাতেই গণমাধ্যমে ম্যাসেজ দিয়েছি বলেছি ভুল হয়ে গেছে ।“