বাংলাদেশের বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে এখনও যেগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি, তাদের আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তালিকাভুক্ত হওয়ার কড়া নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
পুঁজিবাজারে মন্দাভাবের মধ্যে রোববার দেশের সব বীমা কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠকে এই নির্দেশ দেন তিনি। তা না হলে লাইসেন্স বাতিলের হুমকিও তিনি দিয়েছেন।
বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী বলেন, “দেশের যেসব বীমা কোম্পানি এখনও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি, সেসব কোম্পানিকে আগামী তিন মাসের মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বীমা খাতের উদ্যোক্তারাও এ বিষয়ে একমত হয়েছেন।
“অক্টোবর মাস থেকে হিসাব শুরু হবে। সে হিসাবে আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বীমা কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে আসতে হবে।”
পুঁজিবাজারে মন্দাভাব কাটাতে মৌলভিত্তিসম্পন্ন শেয়ারের অভাবের কথা বলে আসছেন বাজার বিশ্লেষকরা। তা ঘোচাতে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার ছাড়ার আলোচনা কয়েকবছর ধরে চললেও তা আলোর মুখ দেখেনি।
বীমা কোম্পানিগুলো তিন মাসের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত না হলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন অর্থমন্ত্রী।
“তিন মাসের মধ্যে যেসব কোম্পানি শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারবে না, তাদের লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করা হবে। তারপর কয়েকটি কোম্পানি মিলে একীভুত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। তারপরও যেসব কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসতে পারবে না, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।”
বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি মিলে মোট ৭৮টি জীবন বীমা এবং সাধারণ বীমা কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে ৪৭টি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত, বাকি ৩১টি এখনও বাইরে রয়েছে।
ঢাকার শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রীর এই বৈঠকে বীমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী এবং বাংলাদেশ বীমা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী বছরের ১ মার্চ বীমা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
বৈঠকে বীমা খাতের উদ্যোক্তারা দেশের সব ফ্ল্যাট এবং আবাসিক ও অনাবাসিক ভবন বীমার আওতায় আনার দাবি জানান।
অর্থমন্ত্রী বীমা খাতে মানব সম্পদ উন্নয়নে বিদেশে পড়াশোনার উপর জোর দেন।
বাংলাদেশের বীমাখাত আগের জায়গায় নেই মন্তব্য করে মুস্তফা কামাল বলেন, “এখন আমরা ইন্স্যুরেন্স খাত থেকে সুবিধা নিতে চাই। সবাই যেন বেনিফিট পাই সেই ব্যবস্থা করতে হবে।”
বৈঠকে বীমার প্রিমিয়াম আদায়কারী মাঠ কর্মীকে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশের বেশি কমিশন দেওয়া যাবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। যারা এই সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গ্রাহকের কাছ থেকে প্রিমিয়াম নেওয়ার সময় বাড়তি অর্থ আদায় না করার সিদ্ধান্তও হয়েছে বৈঠকে। যদি কেউ বাড়তি আদায় করেন তাহলে তাদের লাইসেন্স বাতিলের হুমকিও দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।