মিয়ানমারে রয়ে যাওয়া রোহিঙ্গারা গণহত্যার ঝুঁকিতে: জাতিসংঘ

মিয়ানমারে রয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের ওপর এখনও নির্যাতন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তারা গণহত্যার ঝুঁকি নিয়েই সেখানে বাস করছে।

police-5d80685c0944e

সোমবার জাতিসংঘের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন’ বা তথ্যানুসন্ধান দল তাদের প্রতিবেদনে এ ঝুঁকির কথা উল্লেখ করেছে। তারা আবারও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শীর্ষ কয়েকজন জেনারেলকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির রাখাইন রাজ্যে এখনও প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা বাস করছে। তাদের চলাফেরার উপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এর প্রভাব তাদের মৌলিক মৌলিক চাহিদার উপরও পড়েছে।

আর এ কারণেই বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর রাখাইনে ফেরা অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

অস্ট্রেলিয়ার মানবাধিকার আইনজীবী এবং জাতিসংঘ প্যানেলের সদস্য ক্রিস্টোফার সিডটি এক বিবৃতিতে বলেছেন,  মিয়ানমারে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গারা এখনো গণহত্যার ঝুঁকিতে রয়েছে।

গত বছর সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ মনোনীত তদন্ত প্যানেল তাদের প্রতিবেদনে ‘জাতিগত নিধনের উদ্দেশ্যে’ মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে বলে জানায়।

প্রতিবেদনটিতে এজন্য মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত বলেও পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু মিয়ানমার গত বছরের ওই প্রতিবেদনের বেশিরভাগ অভিযোগই অস্বীকার করেছে।

নতুন প্রতিবেদনে মিয়ানমারের উত্তরের দুই প্রদেশ শান ও কোচিনে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানের নামে সেনাবাহিনী একই ধরনের ‘অত্যাচার ও নিপীড়ন’ করছে বলে জানানো হয়েছে।

জাতিসংঘ প্যানেলের সদস্য ক্রিস্টোফার সিডটি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিপীড়নের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন যেভাবে নিষ্ক্রিয় থেকেছে তা হতাশজনক, এর সমাপ্তি ঘটাতে হবে।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি এবারও কার্যকর ব্যবস্থা না নেয় তবে দুঃখজনক এ ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে।

২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে একযোগে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন শুরু করে। ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাসহ উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শিবিরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী এই সংখ্যা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭ জন। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।

Pin It