নির্ধরিত সময়ের ১০ বছর আগেই প্রতিষ্ঠানকে কার্বনমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অ্যামাজন প্রধান জেফ বেজোস। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০৪০ সালের মধ্যে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কথা নিশ্চিত করেছেন তিনি।
আগের শুক্রবার প্রথমবারের মতো দেড় হাজারের বেশি কর্মী সিয়াটেলের প্রধান কার্যালয়ে একটি ধর্মঘটের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান অবস্থার বিরূদ্ধে অবস্থান নেয়।
আয়োজকরা বেজোসের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানালেও উদ্যোগটি খুব বেশীদুর এগোবে বলে তারা মনে করছেন না—খবর বিবিসি’র।
অপরদিকে বেজোস মনে করছেন নির্ধারিত সময়ের ১০ বছর আগেই তিনি কার্বন নির্গমনের নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন। ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানই এই প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করতে পারবে।
কার্বন নির্গমন কমানোর এই লক্ষ্যকে সফল করার জন্য এক লাখ বৈদ্যুতিক সরবরাহ ভ্যান কিনতে যাচ্ছে অ্যামাজন। এই গাড়িগুলো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে কার্বন নির্গমনের মাত্রা হ্রাস কমাবে। অ্যামাজনের এই সেবাটি শুরু হবে ২০২১ সাল থেকে।
অন্যদিকে পণ্যের সরবরাহ কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য বিশাল ডেটা সেন্টার এবং ক্লাউড কম্পিউটিং সেবা ব্যবহার করতে হয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটিকে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি’র তথ্য অনুসারে ২০১৮ সালে বিশ্বের সর্বমোট শক্তির শতকরা এক ভাগ খরচ হয়েছে ডেটা সেন্টারগুলোতে। আর ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের পরিধি আরও বাড়বে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে বেজোস বলেন তাদের ডেটা সেন্টারের শতকরা ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ আসে নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি শতভাগে পৌঁছাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ ছাড়াও অ্যামাজনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা বনায়ন এবং জলাভূমি নবায়নের জন্য ১০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবেন। আর প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত গ্রিন হাউস গ্যাসের নিঃসরণ পরিমাপ এবং তার প্রতিবেদনও তৈরি করবে।
বিজ্ঞাপ্তিতে বেজোস বলেন, “এই খাতে নেতৃত্ব দিতে আমরা আমাদের সুযোগগুলোকে সম্পূর্ণ কাজে লাগাতে চাচ্ছি।”
২০১৭ সালের জুন মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্যারিসের জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। এর বিপরীতে অ্যামাজন জানালো তারা নির্ধারিত সময়ের ১০ বছর আগেই সেই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারবে।
এদিকে চলতি বছরের জুলাইত মাসে হাজারো কর্মী তাদের কর্মপরিবেশ এবং বেতনের দাবিতে অ্যামাজনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। অ্যামাজন প্রাইম ডে অফারের সময়ই কর্মীদের কাছ থেকে এই বাধা আসে। প্রাইম ডে’র সময় পণ্যের প্রমোশন আর মূল্যছাড় দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।