গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের টানা ১২ দিনের আন্দোলনের মুখে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসিরউদ্দিন পদত্যাগ করেছেন। সোমবার উপাচার্যের পদত্যাগের খবরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আনন্দে মেতে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশনের কাছে উপাচার্যের পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো চিঠি এসে পৌঁছায়নি বলে জানা গেছে।
উপাচার্যের পদত্যাগের খবর পেয়ে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি সমাপ্ত করে ক্যাম্পাসে আনন্দ-উল্লাস শুরু করে। সময় যত গড়াচ্ছে শিক্ষার্থীরা ততই বেশি ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে নেচে-গেয়ে, রং মেখে উল্লাস করছে।
কামরুল বলেন, আমরা অত্যাচার, নির্যাতন, অরিক্তি ফি থেকে মুক্তি পাব। বিএনপিপন্থী এ উপাচার্য পদত্যাগ করায় বঙ্গবন্ধুর পূর্ণভূমি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। আমরা একজন পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দেখতে চাই।
আরেক শিক্ষার্থী সুমি ইসলাম বলেন, আমরা নির্যাতন থেকে মুক্তি পেলাম। আমাদের অভিভাবকরা অপমানের হাত থেকে রক্ষা পেলেন। তার আচার আচরণ ভিসি-সুলভ ছিল না। মুখের ভাষা ছিল খারাপ। আমরা এমন ভিসি আর চাই না।
গত ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর ইউজিসির তদন্ত কমিটি গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। ড. মো. আলমগীরের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির সদস্যেরা শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন ও লিখিত বক্তব্য নেন। তারা উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগেরও তদন্ত করেন।
রোববার তারা ইউজিসির চেয়ারম্যানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে উপাচার্যকে অপসারণের সুপারিশ করা হয়। তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও নৈতিক স্খলনের সত্যতা পওয়া গেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। রোববার রাত ৯ টায় অসুস্থতার কথা বলে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ বাংলো থেকে পুলিশ পাহারায় বের হয়ে যান। পরে সোমবার তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভায় যোগ দেন। সন্ধ্যায় অধ্যাপক ড. নাসিরউদ্দিন উপাচার্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
ময়মসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনলজি অ্যান্ড জেনেটেক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন ২০১৫ সালের শুরুতে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান।