পানি পরিশোধনে সরকারের ব্যাপক ব্যয়ের কথা তুলে ধরে পানি ব্যবহারে সবাইকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে পানি উন্নয়নের তিনটি প্রকল্পের বিভিন্ন পর্যায়ের কাজ উদ্বোধনের সময় তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি একটি অনুরোধ করে যাব। এই যে পানি আমরা শোধন করি ও সরবরাহ করি। এই পানি ব্যবহারে সকলকে সচেতন হতে হবে। পানির অপচয় যাতে না হয় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।”
পানিশোধনে ব্যাপক ব্যয়ের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমাদের একটা অভ্যাস আছে, কল ছেড়ে রেখেই আমরা সব ধরনের কাজ শুরু করে দেই। কিন্তু সেটা না করে ঠিক যতটুকু দরকার ততটুকু ব্যবহার করতে হবে।
“এতে হবে কি? পানির বিল কম উঠবে। আমি যতই বলি আপনারা কম পানি ব্যবহার করেন, আপনারা করবেন না। কিন্তু যদি বলি বিল আপনার কম আসবে, টাকা আপনাকে কম দিতে হবে। তখন নিশ্চয়ই সবাই যত্নবান হবেন-এটা আমি বিশ্বাস করি।”
দেশবাসীর জন্য পানি সরবররাহ নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ঢাকা ওয়াসা পানির উৎপাদন ও সরবরাহে শতভাগ সক্ষমতা লাভ করেছে। এখন আর সেই হাহাকার নেই। যার ফলে এই প্রতিষ্ঠানটি এখন দক্ষিণ এশিয়ায় পানি সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর ‘রোল মডেল’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবনের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি তাকে হত্যার পর বাংলাদেশের সব উন্নয়ন বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথাও তুলে ধরেন তার কন্যা।
তিনি বলেন, সরকার পানি সরবরাহ সেবা, পয়ঃসেবা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিনটি মাস্টারপ্লান প্রণয়ন করেছে, যেগুলোর আলোকে ঢাকা ওয়াসা উদ্বৃত্ত পানি উৎপাদনে সক্ষমতা অর্জন করেছে।
ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করায় নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এখন ভূ-উপরিস্থ পানি যাতে ব্যবহার হয় তার পদক্ষেপ নিয়েছি। সেই সাথে সাথে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণেরও ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
হোটেল সোনারগাঁওয়ে পদ্মা (যশলদিয়া) পানি শোধনাগার (পর্যায় ১) প্রকল্প ও সাভার উপজেলার তেতুলঝোড়া ভাকুর্তা এলাকায় ওয়েলফিল্ড নির্মাণ (১ম পর্ব) প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ‘ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই’ প্রকল্পের অধীন রূপগঞ্জের গান্ধর্বপুরে পানি শোধনাগার নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুত শেষ হওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, “মানুষ ইতিমধ্যে যে পানি পাচ্ছে সেটা যেন তারা ভালোভাবে ব্যবহার করে। এটার রক্ষণাবেক্ষণটাও যেন ভালোভাবে হয়।
“কারণ আমি উদ্বোধন করলাম, তারপরই দেখা গেল কোনো সমস্যা দেখা গেছে। সেটা যেন না হয়। এব্যাপারে সকলকে যত্নবান হওয়ার জন্য আমি আহবান জানাচ্ছি।”
অন্যদের মধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পারকাশ, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত হু ক্যাং ইল, ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান এসময় উপস্থিত ছিলেন।