অস্ট্রেলীয় বিমান সংস্থা কান্তাস এয়ারওয়েজ বিশ্বের দীর্ঘতম বিরতিহীন ফ্লাইট চালু করতে চলেছে। ফ্লাইটটি কোনো প্রকার বিরতি ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনির উদ্দেশে রওনা হবে। এতে করে শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতার চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে হবে বিমানযাত্রীদের।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্লাইটটি বিরতিহীনভাবে নিউইয়র্ক থেকে সিডনিতে পৌঁছাতে সময় নেবে আনুমানিক ২২ ঘণ্টা। শুক্রবার রাতে রওনা হয়ে ফ্লাইটটির সিডনি পৌঁছানোর কথা রয়েছে রোববার সকালে। ‘দীর্ঘ বিমানযাত্রা’ নামক পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের উদ্যোগ হাতে নিয়েছে কান্তাস এয়ারওয়েজ। সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই এই ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। মূলত বিরতিহীন এই দীর্ঘ বিমানযাত্রায় যাত্রীদের ওপর কী রকম প্রভাব পড়ে, সেটিই পরীক্ষা করে দেখতে চাইছে সংস্থাটি।
এর আগে বিশ্বের কোনো ফ্লাইট বিরতিহীনভাবে এত পথ অতিক্রম করেনি। কান্তাস এয়ারওয়েজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এ পদক্ষেপকে তাই বলেছেন ‘আকাশ খাতের সর্বশেষ পরীক্ষা’।
সর্বোচ্চ ৪০ জন যাত্রী ও ক্রু নিয়ে সিডনির উদ্দেশে যাত্রা করবে বোয়িং ৭৮৭-৯ ফ্লাইটটি। যাত্রীদের বেশির ভাগই অবশ্য এয়ারওয়েজের কর্মী। প্রায় ১৬ হাজার কিলোমিটার পথ বিরতিহীনভাবে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি ভর্তি থাকবে ফ্লাইটটিতে। ফলে জ্বালানি নেওয়ার জন্য কোনো বিরতি নিতে হবে না ফ্লাইটটিকে। কম ওজনের ব্যাগপত্র সঙ্গে আনার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে যাত্রীদের। এ ছাড়া যাত্রীদের ঘুমের ধরন, মেলাটোনিন হরমোনের মাত্রা ও খাবার গ্রহণের ধরন সম্পর্কে গবেষণার জন্য দুটি অস্ট্রেলীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিকেরাও ফ্লাইটটিতে থাকবেন।
নিউইয়র্ক ও সিডনির মধ্যে প্রায় ১৫ ঘণ্টার সময়ের পার্থক্য রয়েছে। এ গবেষণার অন্যতম আরেকটি উদ্দেশ্য হলো যাত্রীদের ওপর জেটল্যাগের প্রভাব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টিফেন সিম্পসন এএফপিকে বলেছেন, ‘বিজ্ঞানের একদম মৌলিক বিষয় হলো দুটি স্থানের মধ্যে সময়ের পার্থক্য যত বেশি হবে এবং পশ্চিমের বদলে যত পূর্ব দিকে যাওয়া যাবে, মানুষ তত বেশি জেটল্যাগ অনুভব করবে। কিন্তু একেকজনের জেটল্যাগসংক্রান্ত অনুভূতি একেক রকম। জেটল্যাগের বিষয়ে তাই আমাদের আরও বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন।’
নিউইয়র্ক-সিডনি ছাড়াও আগামী মাসে লন্ডন-সিডনি রুটেও আরেকটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে কান্তাস এয়ারওয়েজ।