দুর্ধর্ষ সিরিয়াল কিলার বাবু শেখ (৪৫)। নাটোর, টাঙ্গাইল ও নওগাঁয় ডাকাতিকালে আট নারীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে সে। মাছ বিক্রেতার বেশ ধারণ করে সে এসব হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। যে বাড়িতে পুরুষ উপস্থিত থাকত না, সেই বাড়ি টার্গেট করে নারীকে খুন করে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নিত বাবু শেখ।
শনিবার রাতে শহরের রেলস্টেশন এলাকা থেকে বাবুকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দিয়েছে সে। এতে উঠে আসে লালপুর ও বাগাতিপাড়ায় জোড়া খুনের ঘটনাসহ তার আট খুন ও ধর্ষণের রোমহর্ষক কাহিনি। এ যেন চাঁদপুরের সেই সিরিয়াল কিলার আরেক রসু খাঁ। রোববার সকালে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি একেএম হাফিজ আকতার।
বাবু শেখ ওরফে আনোয়ার ওরফে আনার ওরফে কালু নওগাঁর রানীনগর থানার হরিশপুর গ্রামের মৃত জাহের আলীর ছেলে। বাবুকে ধরার আগে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলো- সিংড়ার রুবেল আলী ও নাটোর শহরের লালবাজার স্বর্ণপট্টির লিটন খাঁ ও স্টেশনবাজার এলাকার আসাদুল।
জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিআইজি হাফিজ আকতার বলেন, ৮ অক্টোবর রাতে নাটোরের লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলায় পর পর দুই নারীকে হত্যা করে টাকা ও স্বর্ণ নিয়ে যায় একদল চোর। এ ঘটনায় মামলার পর মাঠে নামে পুলিশ। প্রথমে নাটোরের সিংড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রুবেল আলীকে (২৩)। তার দেওয়া তথ্যে নাটোর শহরের স্বর্ণকার লিটন খাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে আসাদুল ইসলামকে (৩৬) গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, দুই হত্যার সঙ্গে জড়িত বাবু শেখ ও রুবেল। এরপরই শনিবার রাতে বাবু শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, গ্রেপ্তারের পর বাবু শেখের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে নাটোর, টাঙ্গাইল ও নওগাঁর আট নারীকে হত্যা ও ধর্ষণ ঘটনার রহস্য উন্মোচন হয়েছে।
৮ অক্টোবর বড়াল নদীর দু’পাড়ের গ্রাম নাটোরের লালপুর উপজেলার চংধুপইল গ্রামের নারী আনসার সদস্য সাবিনা পারভিন ওরফে সাহেরাকে হত্যা করে স্বর্ণের চেইন, কানের দুল, মোবাইল ফোন এবং একই রাতে বাগাতিপাড়ার জয়ন্তিপুর গ্রামের রেহেনা বেগমকে হত্যা করে ১৬ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায় বাবু শেখ।
প্র্রেস ব্রিফিংয়ে নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বড়াইগ্রাম সার্কেল হারুন-অর রশিদ ও ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈকত হাসান উপস্থিত ছিলেন।