সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কোনো ধরনের গুজব ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ঠেকাতে দেশের ৬৪ জেলার মাঠ পর্যায়ের পুলিশ প্রশাসনকে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভার্চুয়াল জগতে তৎপরতা বাড়িয়েছে সাইবার ক্রাইম বিভাগ।
ভোলার ঘটনা ছাড়াও অন্য কোনো ইস্যু তৈরি করে যাতে কোনো অসাধু চক্র পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে না পারে, সেদিকে রাখা হচ্ছে নজর। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। যারা অতীতে সুযোগসন্ধানী হিসেবে নৈরাজ্যকর পরিবেশ তৈরি করেছে, তাদের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে এসব ব্যাপারে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা।
দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, যে কোনো উস্কানিদাতার শাস্তির ব্যাপারে কোরআন-হাদিসে কী ধরনের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, তা আলেম-ওলামাদের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ জনতার মধ্যে প্রচার করা হবে।
এদিকে, শেরপুর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার পাঁচ উপজেলায় নাগরিক সম্প্রীতি সভা হয়েছে। এতে ১৫-২০ হাজার আলেম-ওলামা, ইমাম-মুয়াজ্জিন, রাজনীতিবিদ, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, মাদ্রাসাছাত্র, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি অংশ নেন। প্রতিটি সমাবেশ শেষে আলেম-ওলামারা সিদ্ধান্ত নেন। আগামী শুক্রবার জুমার দিন খুতবার বয়ানে গুজব, মিথ্যা রটনাকারীদের বিরুদ্ধে পবিত্র কোরআনের ব্যাখ্যা সব সাধারণ মুসলমানকে অবহিত করা হবে। ভোলার বোরহানউদ্দিনের ঘটনার জের ধরে যাতে অন্য কোথাও বাঙালির চিরন্তন ধর্মীয় সম্প্রীতি কেউ বিনষ্ট করতে না পারে, সে লক্ষ্যে এ সমাবেশের আয়োজন করে জেলা পুলিশ বিভাগ।
জেলা সদরে এই সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় শহরের তেরাবাজার জামিয়া সিদ্দিকীয়া মাদ্রাসা মাঠে। একই সময় ঝিনাইগাতীর মালিঝিকান্দা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে, শ্রীবরদী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা, নালিতাবাড়ীর তারাগঞ্জ ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা ও নকলা শাহরিয়ার ফাজিল মাদ্রাসায় সম্প্রীতি সমাবেশ করে পুলিশ বিভাগ। শেরপুর সদরের সম্প্রীতি সমাবেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বিল্লাল হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শেরপুরের পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম, সদর ইউএনও ফিরোজ আল মামুন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নূরল ইসলাম হিরো, আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান মো. খোরশেদুজ্জামান, ফখরুল মজিদ খোকন, মৌলানা সিদ্দিক আহমেদ, মৌলানা হযরত আলী, প্রেসক্লাব সভাপতি শরিফুর রহমান, পৌর প্যানেল মেয়র আতিউর রহমান মিতুল প্রমুখ।
সমাবেশে আলেম-ওলামারা বলেন, গুজবে কান দেওয়া গুনাহর কাজ। যাচাই-বাছাই করে প্রমাণিত হলে ইসলামের বিধানমতে পরে অগ্রসর হতে হবে। তারা বলেন, আজকাল ফেসবুক, ইউটিউবে ধর্মের নামে নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর পোস্ট দেওয়া হয়।
পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম বলেন, বিভ্রান্তিকর তথ্য থেকে ভোলায় গুজব ছড়ানো হয়। যারা ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করবে, রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনে তাদের সর্বোচ্চ সাজার ব্যবস্থা করা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। পাশাপাশি কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলেও পার পাওয়া যাবে না।