বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।
সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে একথা জানান বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের নির্বাহী পরিচালকরা।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, “তারা বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্ব ব্যাংক তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনেও তারা সহযোগিতা করবে।
“বিশ্ব ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকরা বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য উন্নয়ন ও এই উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার প্রশংসা করে বলেছেন, উন্নয়নের সব সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে।”
বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সুন্দরভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে বলেও তারা মন্তব্য করে বলে জানান প্রেস সচিব।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশ প্রতিরোধমূলক কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা জানতে চান বিশ্ব ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাধারণ মানুষ যেন উন্নয়নে সুযোগ-সুবিধা পায় সেজন্য তৃণমূলকে গুরুত্ব দিয়ে সরকার সব ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
“যে কোনো উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে আমরা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিকে গুরুত্ব দিই।”
বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ৮২ শতাংশ থেকে ২১ শতাংশে নেমে আসার তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গঠনে জাতির পিতা আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে মায়েদের উৎসাহিত করার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সরকার ৪৯৩ টি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম করছে।
দেশে শিল্পায়নের লক্ষ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকারের নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে।
দেশকে আরও এগিয়ে নিতে রেলপথ, সড়কপথ, বিমান ও নৌপথকে আরও আধুনিক করে গড়ে তোলার পাশাপাশি সারাদেশে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের গৃহীত কার্যক্রম তুলে ধরতে গিয়ে ‘ক্লাইমেট ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠনের কথা বলেন শেখ হাসিনা। পাশাপাশি ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ এবং সবুজ বেষ্টনী সৃষ্টির কার্যক্রম বাস্তবায়নের কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
৩ সম্মাননা গ্রহণ
তথ্য প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দেওয়া তিনটি সম্মাননা গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এগুলো হচ্ছে-‘ডব্লিউআইটিএসএ গ্লোবাল আইসিটি এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯’, ‘ডিসিডি এপিএসি অ্যাওয়ার্ড-২০১৯’ ও ‘গোভইনসাইডার ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড-২০১৯’।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিয়মিত মন্ত্রিসভা বৈঠকের আগে পুরস্কারগুলো হস্তান্তর করেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হাই-টেক পার্ক অবকাঠামো গঠনের জন্য বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথরিটিকে ‘ডব্লিউআইটিএসএ গ্লোবাল আইসিটি অক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ডস-২০১৯’ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আইসিটি ডিভিশনের আওতাধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ‘৪ টায়ার জাতীয় ডাটা সেন্টার (৪টিডিসি) প্রকল্পটিকে ডাটা সেন্টার কন্সট্রাকশন ক্যাটাগরিতে ‘ডিসিডি এপিএসি অ্যাওয়ার্ড ২০১৯’ পুরস্কার দেওয়া হয়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংগঠন ডাটা সেন্টার ডায়নামিকস (ডিসিডি) ‘৪ টায়ার জাতীয় ডাটা সেন্টার (৪টিডিসি) প্রকল্প’ পুরস্কারটি দিয়েছে।
৪ টায়ার ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার (৪টিডিসি) প্রকল্পে’র আওতায় গাজীপুরের কালিয়াকৈরে হাই-টেক পার্কের বিশ্বমানের ডাটা সেন্টার স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
এটুআইর আইসিটি ডিভিশন বাস্তবায়িত কল সেন্টার ‘৩৩৩’ কেন্দ্রীয় ডাটা, সেবা ও অভিযোগ ব্যবস্থাপনার জন্য গোভইনসাইডার এশিয়ার বেস্ট সিটিজেন এঙ্গেজমেন্ট প্রজেক্ট’ এর স্বীকৃতি স্বরূপ ‘গোভইনসাইডার ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড-২০১৯’ পুরস্কার প্রদান করে।