রোহিঙ্গা সঙ্কটের সঙ্গে জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যকে ‘আজগুবি’ বলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের তিনি বলেন, “গতকাল সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা জিয়াউর রহমানের সৃষ্টি। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে নিজেদের অনতিক্রম্য দুর্বলতা ও ব্যর্থতার গ্লানি ঢাকতেই প্র্রধানমন্ত্রী আজগুবি কথা বলছেন, অসত্য কথা বলছেন।
“ইতিহাস সাক্ষী, দেশের জনগণ সাক্ষী, মিয়ানমার বারবার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। ১৯৭৮ সালে সেটি শক্ত হাতে মোকাবিলা করেছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ১৯৯২ সালেও রোহিঙ্গা সংকট কঠোর ও সফলভাবে মোকাবিলা করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।”
রিজভী বলেন, “এটা তো ইতিহাসে লেখা আছে। আজকে অনেকেই বলছেন। ডাকসুর ভিপি কয়েকদিন আগে একটি বক্তৃতার মধ্যে বলেছেন, এটি (রোহিঙ্গা সমস্যা) আটাত্তর সালে ও বিরানব্বই সালে সফলভাবে সমাধান করা হয়েছে। আজকে এই যে চারিদিক থেকে কথাগুলো হচ্ছে, বিএনপির অর্জনগুলো নিয়ে মানুষ প্রশংসা করছে এতেই হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েন সরকার প্রধান। তখন সরাসরি তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমান- এদের বিরুদ্ধে অসত্য কথা বলেন, মনগড়া কথা বলেন, ভিত্তিহীন কথা বলেন।”
রোহিঙ্গা সঙ্কটকে জাতীয় সঙ্কট হিসেবে উল্লেখ করে তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, “আমরা আবারও বলছি, রোহিঙ্গা সংকট দলীয়ভাবে দেখার বিষয় নয়, এটা একটা জাতীয় সঙ্কট। এই সঙ্কট বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্ন। ফলে জাতীয় সংলাপ ডাকুন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সংলাপে বসুন। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান।”
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, “সুচিকিৎসার অভাবে ৭৫ বছর বয়স্ক চার বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা দিন দিন আশংকাজনকভাবে অবণতি ঘটছে।
“পিজি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে সরকারের শেখানো বক্তব্য ও ব্যাখ্যা দিলেও সুচিকিৎসার কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। গত এক সপ্তাহে কোনো চিকিৎসক বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাননি। তার হাতে যে ব্যথা ছিল তা পা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে, সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা। তার ডান পায়ের গোড়ালিতে ফোড়ার কারণে সেই যন্ত্রণা আরও তীব্রতর হয়েছে।
“সরকারি চিকিৎসকরা দেশনেত্রীকে চিকিতসা করছেন না। তার জরুরি ভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। আমরা মনে করি, এই সরকার অন্ধ প্রতিহিংসার বশে বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতেই তার সুচিকিৎসা প্রদানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তার প্রাপ্য জামিনে সরাসরি বাধা দেওয়া হচ্ছে। নগ্নভাবে আদালতের ওপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। তার স্বাস্থ্য নিয়ে অসত্য সংবাদ পরিবেশন করতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা এক ভয়াবহ চক্রান্তের বর্ধিত প্রকাশ।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, শাহিদা রফিক, মামুন আহমেদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।