ক্লাসে ফিরতে এবার ৩ শর্ত বুয়েট শিক্ষার্থীদের

buet-graffiti-mzo0010

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর আন্দোলনে নামা বুয়েটের শিক্ষার্থীরা মামলার অভিযোগপত্র হওয়ার পর এখন ক্লাসে ফেরার ক্ষেত্রে তিনটি শর্ত দিয়েছে।

আবরার হত্যামামলার অভিযোগপত্র দেওয়ার দাবি পূরণ হওয়ার পরদিন বৃহস্পতিবার বুয়েটের শহীদ মিনারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে বুয়েট প্রশাসনকে তিনটি শর্ত দেন তারা।

৩ শর্ত

১. আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বুয়েট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা।

২. আহসানউল্লাহ, তিতুমীর ও সোহরাওয়ার্দী হলের আগের র‌্যাগের ঘটনায় অভিযুক্তদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া।

৩. সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি ও র‌্যাগের জন্য সুস্পষ্টভাবে বিভিন্ন ধাপে ভাগ করে শাস্তির নীতিমালা করে বুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট থেকে অনুমোদন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্সে তা অন্তর্ভুক্ত করা।

আবরার হত্যাকাণ্ডের পর আন্দোলনে নেমে এক মাসের বেশি সময় ধরে ক্লাস বর্জন করে আসা বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই তিনটি শর্ত পূরণ হলে শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরবেন তারা।

পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে আবরার হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শেষ করে ২৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়ায় পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অনিরুদ্ধ গাঙ্গুলী জানান, টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার বিষয়ে গত ২ নভেম্বর বুয়েটের উপাচার্য, ছাত্র কল্যাণ পরিচালক ও ডিনদের সঙ্গে আলোচনায় ওই তিনটি শর্তের কথা জানিয়েছিলেন তারা।

এর মধ্যে প্রথম দুটি দাবি বাস্তবায়ন হলে পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণে সম্মত এবং তৃতীয় দাবি বাস্তবায়ন করা হলে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে রাজি শিক্ষার্থীরা।

অনিরুদ্ধ বলেন, “আলোচনায় বুয়েট প্রশাসন পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে দুটি দাবি বাস্তবায়ন করার আশ্বাস দেন। আমরা প্রশাসনের সদিচ্ছার উপরে বিশ্বাস রেখেছি ও অপেক্ষা করেছি। কিন্তু গত দুই সপ্তাহেও আমরা কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে পাইনি।”

ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরতে নিজেদের আগ্রহের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরাও চিন্তিত এবং দ্রুততম সময়ে একাডেমিক ও পরীক্ষা কার্যক্রমে আমরা ফিরে যেতে চাই।

“এজন্য আমরা গত ১৫ অক্টোবর থেকে মাঠ পর্যায়ের আন্দোলন থেকে সরে এসেছি এবং প্রশাসনের সাথে বারবার আলোচনার মাধ্যমে ও তাদেরকে পর্যাপ্ত সময় দিয়ে বুয়েটে একটি সুস্থ ও নিরাপদ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সদিচ্ছা ও পর্যাপ্ত পদক্ষেপের অভাব লক্ষ্য করছি আমরা।”

শিক্ষার্থীদের শর্তের বিষয়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

গত ৬ অক্টোবর শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নির্যাতনে আবরারের মৃত্যুর পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি মেনে নেয় বুয়েট কর্তৃপক্ষ।

১০ দফার কয়েকটি মেনে নেওয়ার পর গত ১৫ অক্টোবর মাঠের আন্দোলন থেকে সরে আসে বুয়েট শিক্ষার্থীরা; তবে মামলার অভিযোগপত্র ও অন্য দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে না ফেরার ঘোষণা দেয়।

বুধবার পুলিশ অভিযোগপত্র দেওয়ার পর নিজের অবস্থান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

Pin It