জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, দরিদ্র জনগণকে এগিয়ে নিতে পারলে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। দারিদ্র্যতা নির্মূলের পাশাপাশি অসমতা দূর করে সমতার ভিত্তিতে সমাজ গড়ে তুলতে পারলেই দৃশ্যমান হবে টেকসই উন্নয়ন। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয় তুলনামূলকভাবে দ্রুতগতিতে বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়ে বংশানুক্রমিক দারিদ্র্য চক্র ভাঙতে হবে।
বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জেনারেল ইকোনমিক ডিভিশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ সোশ্যাল সিকিউরিটি কনফারেন্স অ্যান্ড নলেজ ফেয়ার- ২০১৯’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
স্পিকার বলেন, পিছিয়ে পড়া বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূল স্রোতে সম্পৃক্ত করতে হবে। তাদের জন্য সুযোগ তৈরির পাশাপাশি তাদেরকে সামর্থ্যবান হিসেবে গড়ে তোলাও প্রয়োজন। এর ফলে অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের মাধ্যমে অন্তর্ভূক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে গরিব মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে চলেছেন। সমাজের প্রান্তিক, অবহেলিত এবং পিছিয়ে পড়া মানুষদের এগিয়ে নিতে একাধিক সুরক্ষা প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর শেখ হাসিনাই প্রথম গরিব, দুঃস্থ, বিধবা, বয়স্ক মানুষদের নিয়ে বিশদ চিন্তা-ভাবনা করে দুর্দশা লাঘবে বিভিন্ন ভাতা, অনুদান ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করেছেন। দশ টাকা কেজিতে চাল বিতরণ, বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ, স্বল্পমূল্যে ট্রাকে করে খাদ্য সামগ্রী বিক্রি করছে সরকার। সরকারের লক্ষ্য হলো দেশের একটি মানুষও না খেয়ে থাকবে না, কেউ গৃহহীন থাকবে না।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম এতে কীনোট উপস্থাপন করেন। সূচনা বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) শেখ মুজিবুর রহমান। আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর, ইউনিসেফ বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রতিনিধি, ডিএফআইডি বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রতিনিধি, ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
স্পিকারের সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সাথে ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস গতকাল তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাত্ করেছেন। সাক্ষাতকালে তার দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন, বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও মুজিববর্ষ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন। হাইকমিশনার ভারতের লোকসভায় সফরের জন্য লোকসভা ও রাজ্যসভার যৌথ আমন্ত্রণপত্র শিরীন শারমিন চৌধুরীকে হস্তান্তর করেন। স্পিকার সুবিধানজনক সময়ে ভারতের লোকসভায় সফর করবেন বলে রিভা গাঙ্গুলীকে আশ্বস্ত করেন। এসময় তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে ভারতের লোকসভার স্পিকারকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সফরের আমন্ত্রণ জানাবেন বলে উল্লেখ করেন।