টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি তারকায় ঠাসা দল ঢাকা প্লাটুন। কিন্তু প্রথম ম্যাচে একদমই নিষ্প্রভ সেই তারকারাজি। ব্যাটে-বলে দাপুটে পারফরম্যান্সে মাশরাফি-তামিমদের দলকে উড়িয়ে দিয়েছে আন্দ্রে রাসেলের রাজশাহী রয়্যালস।
বঙ্গবন্ধু বিপিএলে দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচে ঢাকা প্লাটুনকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে রাজশাহী রয়্যালস।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ঢাকাকে ১৩৪ রানে আটকে রেখে রাজশাহী জিতে ১০ বল বাকি রেখেই।
উইকেটে ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন কিছু ছিল না। রাজশাহীর ইনিংসেই প্রমাণ মিলে সেটির। ঢাকা ডুবেছে ব্যাটসম্যানদের বাজে শটের মহড়ায়।এই ম্যাচ দিয়েই ৫ মাস পর মাঠে ফেরেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ব্যাট হাতে খেলেন ক্যামিও। বোলিংয়ে উইকেট না পেলেও একদম খারাপ করেননি। তবে দল বড় ব্যবধানে হেরে যাওয়ায় ফেরার ম্যাচটি থেকে সব মিলিয়ে পাননি মনে রাখার মতো খুব বেশি কিছু।
তামিম ইকবালের জন্যও ছিল একরকম মাঠে ফেরার ম্যাচ। পারিবারিক কারণে কিছুদিন ছিলেন ক্রিকেটের বাইরে। গত বিপিএলের ফাইনালে ১৪৫ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যান এবার বিপিএল শুরু করলেন ৫ রানে আউট হয়ে।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকা দ্বিতীয় ওভারেই বড় ধাক্কা খায় তামিমকে হারিয়ে। তিনে নামা লরি ইভান্স পারেননি ইনিংস বড় করতে। জাকের আলি খেলছিলেন ভালোই, কিন্তু রান আউট হয়ে যান ১৯ বলে ২১ রান করে।
তামিমের সঙ্গে ইনিংস শুরু করা এনামুল হক ছিলেন এক পাশে। দুটি ছক্কা মেরে ভালো ইনিংসের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি বড় করতে। আউট হয়ে যান ৩৩ বলে ৩৮ করে।
মিডল অর্ডারে থিসারা পেরেরা, আরিফুল হকরা ব্যর্থ। শহিদ আফ্রিদি আউট প্রথম বলেই।
ধুঁকতে থাকা দলকে শেষ দিকে কিছুটা দ্রুত রান এনে দেন ওয়াহাব রিয়াজ ও মাশরাফি। ১২ বলে ১৯ রান করেন ওয়াহাব। ২ ছক্কায় ১০ বলে ১৮ রান করেন মাশরাফি। আবু জায়েদের করা ইনিংসের শেষ ওভার থেকে আসে ২০ রান।
মাঝ বিরতিতে মনে হচ্ছিল, ওই রানে অন্তত লড়াই করতে পারবে ঢাকা। কিন্তু হজরতউল্লাহ জাজাই ও লিটন দাস জমতেই দেননি লড়াই। উদ্বোধনী জুটিতেই অনেকটা নিশ্চিত করে দেন ম্যাচের ভাগ্য।লিটন খেলেন দৃষ্টিনন্দন সব শট। জাজাই খেলেন বল বুঝে, লক্ষ্য বড় ছিল না বলে খুব তাড়াহুড়ো করেননি। জুটি এগোয় অনায়াসেই।
দুজনের ৬২ রানের জুটি ভাঙে লিটনের বিদায়ে। মেহেদি হাসানের অফ স্পিনে দারুণ এক ছক্কার পর আবার বড় শট খেলতে গিয়ে আউট লিটন। করেন ২৭ বলে ৩৯।
এরপর জাজাই ও অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক মিলে ম্যাচ শেষ করে ফেরেন। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ১০ ওভারে আসে ৭৪ রান।
৪৭ বলে ৫৬ রানে অপরাজিত থেকে যান জাজাই, মালিক ৩৬ বলে ৩৬।
১৯তম ওভারে জয় এলেও ম্যাচের উত্তেজনা শেষ হয়ে গিয়েছিল অনেক আগেই। রান রেটের চাপ ছিল না, দুজনের কাউকেই খুব ঝুঁকি নিতে হয়নি। তুমুল লড়াইয়ের আবহ থাকলেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচ হয়েছে ম্যাড়ম্যাড়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা প্লাটুন: ২০ ওভারে ১৩৪/৯ (তামিম ৫, এনামুল ৩৮, ইভান্স ১৩, জাকের ২১, থিসারা ১, আরিফুল ৫, আফ্রিদি ০, মেহেদি ৬, ওয়াহাব ১৯, মাশরাফি ১৮*, হাসান; রাসেল ৩-০-৮-০, আবু জায়েদ ৪-০-৪৩-২, তাইজুল ৩-০-২৩-১, ফরহাদ ২-০-১৪-১, অলক ৪-০-১৮-১, মিনহাজুল আফ্রিদি ১-০-১২-০, বোপারা ৩-০-১৫-১)।
রাজশাহী রয়্যালস: ১৮.২ ওভারে ১৩৬/১ (জাজাই ৫৬*, লিটন ৩৯, মালিক ৩৬*; মাশরাফি ৩-০-১৮-০, হাসান ৪-০-৩৫-০, মেহেদি ৪-০-২৩-১, ওয়াহাব ৩.২-০-২৬-০, আফ্রিদি ৩-০-২৫-০, থিসারা ১-০-৬-০ )।
ফল: রাজশাহী রয়্যালস ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: রবি বোপারা