রাস্তার দুর্দশা নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্মাণ কাজে ধুলা ওড়াটাই স্বাভাবিক।
সোমবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ওবায়দুল কাদেরের এ মন্তব্য আসে।
সড়কের কাজের মান নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে গত ১৯ ডিসেম্বর এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, “রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে নিজের এলাকায় যেতে লজ্জা লাগে। সড়কের বেহাল অবস্থার জন্য লজ্জায় গাড়ির গ্লাস তুলে রাখতে হয়, নামানো যায় না।”
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমি উনাকে বলেছি, এটা হল ভুল বোঝাবুঝি। ওই রাস্তাটি ফোরলেইন হচ্ছে। কন্সট্রাকশন ওয়ার্কে তো ধুলোবালি উড়বেই, এটা হলো বাস্তবতা। সেটা হয়তো উনি বাড়ি যেতে বার বার বিরক্ত হচ্ছেন।
“কিন্তু ঢাকা থেকে তো উনি (অর্থমন্ত্রী) কুমিল্লা পর্যন্ত ভালোভাবেই যাচ্ছেন লাকসাম রোড পর্যন্ত।… আন্ডার কন্সট্রাকশন রোডে যা হয়, সেটা সেখানেও ঘটেছে। “
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাকেই আগামী বছরের মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “প্রথম কথা শৃঙ্খলা, দ্বিতীয় কথা শৃঙ্খলা এবং তৃতীয় কথা শৃঙ্খলা।”
এ বছর সেই কাজে কতটুকু সফল হয়েছেন জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “না, এখনও পারিনি এটা। নতুন কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছি, কিছু রেকমেন্ডেশনস আছে। টাস্কফোর্স এর মধ্যে একবার বসেছে এবং সেগুলোর বাস্তবায়নে বিআরটিএ’র কিছু কাজ আছে। এনফোর্সমেন্টের বিষয়টা পুলিশের হাতে। সব মিলিয়ে আমরা এখন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করব।”
‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকার উপায় নাই’
নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করতে গিয়ে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকাকালে যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটেছিল, সে সময় কিছু লোক ভারতে অভিবাসী হয়েছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকরা ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেটা বলছেন বাংলাদেশের বাস্তবতায় এটি কি অসত্য? ২০০১ সাল থেকে যে মাইনরিটি পারসিকউশন এদেশে হয়েছে, এটা কেবলমাত্র একাত্তরের বর্বরতার সাথে তুলনা হয়। কাজেই এখানে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার কোনো উপায় নাই।“
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপি যতই সত্যকে চাপা দিতে চাক, আপনারা জানেন, তখন কীভাবে মাইনরিটির ওপর অত্যাচার হয়েছে; বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর। ওই অবস্থায় মাইনরিটিরা দেশ থেকে পলায়ন করাটাই ছিল স্বাভাবিক।
“অনেকেই জান-মালের নিরাপত্তার জন্য সেদিন পালিয়েছেন। মির্জা ফখরুল সাহেব যতই সাফাই গান না কেন, যে সত্য দিবালোকের মত সত্য, তা চাপা দিয়ে কারও কোনো লাভ নেই। সত্যের বন্যা অপ্রতিরোধ্য, এটা প্রকাশ হবেই।”
একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করতে গিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী ভারতে বলেছেন, যদি প্রমাণিত হয় যে বাংলাদেশ থেকে কোনো সময় লোক গেছে, তাদের ফেরত আনা হবে।
এ ব্যাপারে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ফেরত আনার যদি প্রয়োজন হয়… তাহলে এখন শেখ হাসিনা সরকারের আমলে মাইনরিটি পারসিকিউশনের মত কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে অঞ্চলভিত্তিক দুই চার জায়গায় কিছু ঘটনা ঘটেছে। সেটা মাইনরিটি দেশ থেকে পলায়নের মত বা দেশ থেকে নিরাপদ আশ্রয় নেওয়ার জন্য ভারতে যাওয়ার কারণ সৃষ্টি করেনি। এ ধরনের কেনো ঘটনাও ঘটেনি।”
কিন্তু বিএনপি আমলে যা ঘটেছে তাতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভারতে চলে যাওয়াটা ‘খুব স্বাভাবিক’ বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের।
তিনি বলেন, “আমরা তখন ছিলাম বিরোধী দল, আমরা সহানুভূতিশীল ছিলাম। অনেক জায়গায় লঙ্গরখানা করেছি। ঢাকাতেও আমরা অনেককে আশ্রয় দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তখন ভয়ভীতির কারণে অনেকে চলে যেতে পারে।”
তারা ফিরে আসতে চাইলে আনা হবে কি না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “তারা আসতে চাইলে আমরা ফিরিয়ে নেব।”