নতুন বছরে নতুন আশার মালা গেঁথে সরকার ও দলের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে চান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
খ্রিস্টীয় নতুন বছর শুরুর আগের দিন মঙ্গলবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহারে বিএনপির আপত্তি নিয়েও কথা বলেন তিনি।
ক্ষমতাসীন দলের এই নেতার মতে, নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ তোলা বিএনপির অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে অভিযোগ তুলে ভোটের আগেই তারা ‘হেরে বসে থাকেন’।
সাংবাদিকরা চলতি বছরের কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন এবং আগামী বছরের কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন ওবায়দুল কাদেরের কাছে।
জবাবে তিনি বলেন, “সবই সাফল্য- এমন দাবি করব না, কিছু কিছু ব্যর্থতা আছে। এ বছর ছয় মাসই অসুস্থ ছিলাম। পুরো বছর কাজ করতে পারিনি। শুরুটা করেছিলাম ভালো। আমরা আমাদের সম্মেলনগুলো করেছি, খবুই ঝড়ো দিন গেছে। এখন আবার সিটি কর্পোরেশন নিয়ে ভীষণ ব্যস্ততা যাচ্ছে।
“দলেও আমাদের টিমওয়ার্ক ভালো হয়েছে। নতুন বছরে অতীতের ভুল-ক্রটি থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য নবতর পথযাত্রা শুরু করব, নতুন আশার মালা গেঁথে আমাদের সামনে যে চ্যালেঞ্জ সে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করব।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করব। গণতন্ত্রকে আরও উন্নয়ন করব, সুশাসনে আরও উন্নয়ন হবে এবং মেগা প্রকল্পগুলো এগিয়ে যাবে। সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নে ধাপে ধাপে পদক্ষেপ নেব।”
বিদায়ী বছরের ব্যর্থতা কী ছিল- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “পারফেক্ট সব কিছু করতে পেরেছি সে দাবি তো করেনি।”
নতুন বছরে কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে জানতে চাইল ওবায়দুল কাদের বলেন, “নতুন বছরের প্রথমে হচ্ছে সিটি কর্পোরেশন ইলেকশন, আগেও বলেছি ফ্রি ফেয়ার ক্রেডিবল ইলেকশন করতে আমরা বদ্ধ পরিকর। আমরা একটা ভালো ইলেকশন করতে চাই। ইলেকশনে যেটাই রেজাল্ট হোক মেনে নেব। আমরা জয়ের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। অলরেডি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি করে ফেলেছি, কাজ শুরু হবে। আনুষ্ঠান্কি প্রচারণা শুরু হবে বিজয়ের লক্ষ্যে।”
মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন আসছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার তো মনে হয় না সিটি কর্পোরেশন ইলেকশনের মধ্যে রিশাফল হবে।”
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি করেছেন উত্তরে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, যিনি পাঁচ বছর আগের এই নির্বাচনে ভোটগ্রহণের মধ্যে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে হেরে গিয়েছিলেন।
তার দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “তাদের কে যে কোন কথা বলে, তাদের নেতাদের মধ্যে বক্তব্যের কোনো মিল নেই, তারা এলোমেলো হয়ে গেছে। একেকজন একেক কথা বলে, একথা তারা বলেছেন তারা নির্বাচনে আসবেন, এত কথা উঠে কেন?”
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ইভিএমে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, তার ‘বেশিরভাগেই’ বিএনপির প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন বলে দাবি করেন সরকারের এই মন্ত্রী।
বিএনপি নেতাদের নিয়ে তিনি বলেন, “এখানে তাদের হারানোর কিছু নেই, ইভিএম বেশি হলে তাদের হয়ত বেশি করে জেতার সম্ভাবনা থাকতে পারে। নির্বাচনে ইভিএমকে ক্রটিযুক্ত মনে করার কোনো কারণ নেই। এর আগে কোনো ত্রুটি ধরা পড়েনি।”
বিএনপির অতীত ইতিহাস তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি আসলে ইলেকশন করবে, তারা তাদের একটি পুরনো অভ্যাসটা হল নির্বাচনের আগেই তারা হেরে যায়। তারা নানা অভিযোগ তুলে আগেভাগেই তারা হেরে যাওয়ার অজুহাতগুলো তারা সৃষ্টি করে। অজুহাতগুলো সৃষ্টি করে জনগণের সামনে উত্থাপন করে।
“এমনও হয় ইলেকশনে তারা জিতে গেছে সেই ইলেকশনেও ভোট গণনা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা অবিরাম তোতা পাখির মতো বুলি আওড়াতে থাকে- এই ইলেকশনে জালিয়াতি হয়েছে, ভোট দখল হয়েছে এসব কথা তারা সিলেটেও বলেছে।”