বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা বঙ্গবন্ধুকে কম সময়ে হারিয়েছি। আর ব্যর্থতা হলো, বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতে পারেনি। একজন রাষ্ট্রপ্রধানকে বাঁচানোর দায়িত্ব সবার। সেখানেও ব্যর্থ হয়েছি। আর ব্যর্থ হয়ে অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হয়েছি।’
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরাম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তির পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু করাচি থেকে লন্ডন ও দিল্লি হয়ে দেশে ফেরেন। সে সময় তার সঙ্গী ছিলেন তরুণ রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী কামাল হোসেন।
স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সময়কার স্মৃতি রোমন্থন করে ড. কামাল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন দেশে ফিরছিলেন, লন্ডন বিমানবন্দরে তাকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে সম্মান জানানো হয়েছিল। ব্রিটেনের পুলিশ বঙ্গবন্ধুকে স্যালুট দিয়ে বলেছিল, ‘আপনার জন্য আমরা প্রার্থনা করেছিলাম।’ তখন বিশ্বব্যাপী বাঙালি শ্রদ্ধা ও সম্মান অর্জন করেছিল।
সেই দিনের কথা মনে করে তিনি বলেন, এটা বিশেষ দিন। তারা একসঙ্গে ফিরে এসেছেন। এটা তার জন্য আনন্দের দিন।
ড. কামাল আরও বলেন, ‘আমরা অসাধারণ এক নেতৃত্ব পেয়েছিলাম। সেই নেতৃত্বের কারণেই আমাদের স্বাধীনতা সম্ভব হয়েছিল। বাংলাদেশ যত দিন থাকবে, বঙ্গবন্ধুকে সবাই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।’
বঙ্গবন্ধু অন্যায়ের ব্যাপারে আপস করেননি- এ কথা উল্লেখ করে গণফোরাম সভাপতি বলেন, কোনো অন্যায় দেখলে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। স্বাধীনতা মানে সব জনগণের, কোনো ব্যক্তির না। এখানে স্বৈরতন্ত্র থাকার অবকাশ নেই। নির্ভেজাল গণতন্ত্র থাকবে।
তিনি বলেন, জনগণের অধিকারে কোনো ঘাটতি থাকলে বোঝা যাবে- বঙ্গবন্ধুর কথাকে অমান্য করা হচ্ছে। আজকের দিনে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এত সভা, অনুষ্ঠান হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানানোর উপায় হলো, বঙ্গবন্ধুর কথাগুলোকে ষোলোআনা পালন করা।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতার গুরুত্ব উল্লেখ করে ড. কামাল বলেন, বিচারকরা ঝুঁকি নিয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ ও সুব্রত চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাব্বির খান, মহসিন রশীদ ও জগলুল হায়দার, যুগ্ম সম্পাদক মোশতাক আহমেদ প্রমুখ।