বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি উদারপন্থি দল। এই দলের কাছে বিপ্লব আশা করলে হবে না। এই দল তার নিজস্ব চরিত্র নিয়ে এগিয়ে যাবে।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত ‘নির্বাচনে আস্থাহীনতা, ইভিএমের ব্যবহার : বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে আন্দোলন করতে গিয়ে দলের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে উঠতে এখনও তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। ভুল-ত্রুটি থাকতেই পারে; তবে সেই ভুল-ত্রুটি থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
আন্দোলন নিয়ে দলের মধ্যে চলমান সমালোচনা প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘বিশ্ব রাজনীতির যে পরিবর্তন হয়েছে, সেই পরিবর্তনগুলোকে সামনে নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের এগোতে হবে। আজকে হঠাৎ করে হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে চাই না।’
ফখরুল বলেন, বিএনপি আন্দোলনেই আছে। আদালত হোক, আলোচনা হোক কিংবা নির্বাচনে অংশগ্রহণ হোক– এর সবই আন্দোলনের অংশ। এগুলোকে একত্র করে বিএনপি বড় আন্দোলনের দিকে এগিয়ে যাবে।
সিটি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্যই বিএনপি অংশ নিয়েছে– এ কথা উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘জনগণকে একত্র করতে পারলে সরকারের সব ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিয়ে এই নির্বাচনে নিশ্চয়ই জয়ী হতে পারব। নির্বাচনে তরুণদের বেছে নিয়েছি, তাদের সঙ্গে নিয়ে নিশ্চয়ই জয়ী হবো।’
যেদিন বিচারপতি খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের রায় দিয়েছেন, সেদিন থেকে দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন ফখরুল।
গোলটেবিল বৈঠকে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের কায়দায় আর ভোট ডাকাতি করার সুযোগ নেই। এ জন্য এবার ইসি ইভিএমের পথ বেছে নিয়েছে।
তিনি বলেন, ইভিএমের ভোট, ৩০ তারিখের ভোট কোনো ভোট নয়। ওই ভোটে ধানের শীষ জিততে পারবে না। ওরা জিততে দেবে না। যদি ভোট হতো তাহলে নৌকার খবরই থাকত না। সে জন্যই ইভিএম আমদানি করা হয়েছে।
সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আখতার হোসেন। এ সময় তথ্যচিত্রের মাধ্যমে ত্রুটিযুক্ত ইভিএমে ভোট কারচুপির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শওকত মাহমুদ ও সদস্য সচিব অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, আইন বিভাগের অধ্যাপক এবিএম বোরহানউদ্দিন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক একেএম আমিনুল হক, সাংবাদিক এম এ আজিজ, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে (একাংশ) সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী।