৩৪ সেকেন্ডেই ছিনতাই! অনেকটা বাজ পাখির মতোই। তাও দুই দফায়। প্রকাশ্য দিবালোকে প্রথমে ছিনতাইকারীরা ছিনিয়ে নেয় ভুক্তভোগী নারীর ভ্যানিটি ব্যাগ। দ্বিতীয় দফায় শরীর তল্লাশি করে নেয়া হয় তার গলার চেইনসহ স্বর্ণালংকার। ঘটনাটি রাজধানীর উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর সড়কের।
গত শনিবার সকাল ৭টা ৫৭ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড। রাজধানীর উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর সড়ক। শৈত প্রবাহ এবং তীব্র শীতের কারণে বেশ কিছুদিন সূর্যের দেখা না মিললেও ওইদিন রোদের দেখা পেয়েছিল রাজধানীবাসী। রিকশায় করে অন্যদিনের মতো কর্মক্ষেত্র ৩ নম্বর সেক্টরে যাচ্ছিলেন এক স্কুল শিক্ষিকা। হঠাৎ করেই পেছন থেকে আসা একটি মোটরসাইকেল রিকশার গতিরোধ করে। লাল-কালো রংয়ের পালসার ব্র্যান্ডের ওই মোটরসাইকেলকে হেলমেট পরিহিত দুইজন আরোহী। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই মুখ খোলা হেলমেট পরিহিত এক ব্যক্তি ছুটে আসে রিকশায় বসে থাকা ওই শিক্ষিকার দিকে। শরীরে ছুরি স্পর্শ করে ‘ছোঁ’ মেরে কেড়ে নেয় ওই শিক্ষিকার হাতে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ। নির্বাক দৃষ্টিতে অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকে রিকশাওয়ালা। প্রথম দফায় ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে গেলেও সন্তুষ্ট হতে পারেনি ছিনতাইকারীরা। মোটরসাইকেলে উঠলেও আবার নেমে আসে ওই ছিনতাইকারী। দ্বিতীয় দফায় আবারও ছুরি ঠেকায় ওই শিক্ষিকার শরীরে। এবার হিজাব পরিহিত ওই শিক্ষিকার হিজাব সরিয়ে গলা থেকে স্বর্ণের চেইন এবং হাতে থাকা চুড়ি ছিনিয়ে নেয় অনেকটা ফিল্মি স্টাইলে। ৭ টা ৫৮ মিনিট ২২ সেকেন্ডে ৩৪ সেকেন্ডের ছিনতাই অপারেশন শেষ করে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায় ওই দুর্বৃত্তরা। ভয়ে কিছু সময় হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন ওই শিক্ষিকা। স্কুলে না গিয়ে পুণরায় বাসায় ফিরে আসেন। ওইদিনই এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষিকার পক্ষে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার স্বামী রহুল আমিন।
মঙ্গলবার রুহুল আমিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ওই দিনের দৃশ্য আমার স্ত্রী কোনভাবেই ভুলতে পারছে না। মাঝেমাঝেই ভয়ে আঁতকে উঠছে।
মঙ্গলবার পর্যন্ত ওই ঘটনার কোন অগ্রগতি আছে কি না জানতে চাইলে উত্তরা (পশ্চিম) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তপন চন্দ্র সাহা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে এখনো অবগত নই। তবে খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।