ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ৩৪ মার্কিন সেনাকে মস্তিষ্কে আঘাতজনিত সমস্যার চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।
আহতদের মধ্যে ১৭ সেনাকে এখনও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন।
বাগদাদ বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলায় কুদস বাহিনীর কমান্ডার কাসেম সোলেমানি নিহতের পাল্টায় তেহরানের ওই হামলায় কোনো মার্কিন সেনা আহত হননি বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন।
পেন্টাগনের সাম্প্রতিক তথ্য ওই দাবিকে খারিজ করে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
কয়েকদিন আগে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডও ইরানি হামলায় ১১ মার্কিন সেনার মানসিক অস্থিরতাজনিত সমস্যা দেখা দেওয়ার কথা জানিয়েছিল।
এ নিয়ে সুইজারল্যান্ডের দাভোস সম্মেলনে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, সৈন্যদের মাথাব্যথাসহ হালকা কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল বলে তিনি শুনেছেন।
“আমার কাছে ওগুলোকে বড় কোনো সমস্যা মনে হয়নি,” বলেছিলেন তিনি।
পেন্টাগন জানিয়েছে, ইরাকের আইন আল-আসাদ ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় অধিকাংশ সৈন্যকেই বাংকারে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছিল।
তেহরানের হামলায় কোনো মার্কিন সেনা নিহত হয়নি বলেও জোর দিয়ে জানিয়েছে তারা।
শুক্রবার মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জনাথন হফম্যান জানান, মস্তিষ্কে আঘাতজনিত সমস্যায় ভোগা ৮ সেনাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে। ৯ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে জার্মানিতে।
আহত বাকি ১৭ সেনার মধ্যে ১৬ জনকে ইরাকে এবং একজনকে কুয়েতে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। এরা পরে বাহিনীতে ফিরেছেন বলেও হফম্যান নিশ্চিত করেছেন।
ইরানি হামলার পর তাৎক্ষণিকভাবে ৩৪ সেনার এ মস্তিষ্কে আঘাতজনিত সমস্যার বিষয়টি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মার্ক এসপারকে জানানো হয়নি, বলেছে পেন্টাগন।
সেনাদের মস্তিষ্কে আঘাতজনিত এ সমস্যার বিষয়টি এতদিন লুকিয়ে রাখার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে অলাভজনক সংস্থা ইরাক অ্যান্ড আফগান ভেটেরান অব আমেরিকা।
যুদ্ধক্ষেত্রগুলোতে মস্তিষ্কে আঘাতজনিত সমস্যাটি (টিবিআই) খুবই সাধারণ ঘটনা, বলছে মার্কিন সেনাবাহিনী।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিস্ফোরণের প্রভাবে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয় বলে জানিয়েছে মার্কিন ডিফেন্স অ্যান্ড ভেটেরান ব্রেইন ইনজুরি সেন্টার।
শুক্রবার বাগদাদে কয়েক লাখ মানুষ যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বিক্ষোভ দেখিয়েছে বলেও জানিয়েছে বিবিসি।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা ইরাক থেকে মার্কিন ও অন্যান্য দেশের সেনাদের প্রত্যাহারের দাবি জানান।
ইরাকের পার্লামেন্টও যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল বিদেশি বাহিনীকে তাদের ভূখণ্ড ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে।