ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচারের শেষ দিনে বিএনপি মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগ ভোটকেন্দ্র দখল করতে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে জেলা কমিটি থেকে ঢাকায় লোক পাঠাচ্ছে। তিনি বলেন, ভোটের দিন কী হতে যাচ্ছে তা নিয়ে আমরা সবাই শঙ্কিত। এর মধ্যেও আজ ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি সবাই নির্ভয়ে দলবেঁধে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। আমরা গণতন্ত্র ও নিজেদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনে রয়েছি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গোপীবাগে নিজ বাড়ির সামনে থেকে গণসংযোগ শুরুর আগে তিনি এসব বলেন। গণসংযোগকালে পথচারীদের হাতে লিফলেট বিতরণ এবং দোকানে দোকানে গিয়ে সালাম ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ইশরাক।
এ সময় বহুতল ভবনের ছাদে, বারান্দা ও ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে নারী-পুরুষ করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। অনেকে ফুলের পাপড়ি ছিটান ধানের শীষের প্রার্থীসহ গণসংযোগ বহরে।
নগরবাসীর উদ্দেশে ইশরাক বলেন, মা-বাবা, ভাইবোন যারা ভোটার আছেন, তাদের সবার প্রতি আবেদন, সবাই নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। বিএনপি আপনাদের পাশে থাকবে। আপনাদের সুরক্ষা দেবে।
দক্ষিণ সিটিতে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস অভিযোগ করেছেন, ১৭০টি কেন্দ্র দখল করার জন্য বিএনপি প্রস্তুতি নিয়েছে এবং তারা সন্ত্রাসী ভাড়া করেছে। এ প্রসঙ্গে ইশরাক হোসেন বলেন, এটা একেবারে অবাস্তব একটা ব্যাপার। বরং আমার কাছে ডকুমেন্ট আছে যে, আওয়ামী লীগ জেলা কমিটি থেকে লোক পাঠাচ্ছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার জন্য তারা লঞ্চভর্তি নেতাকর্মী জড়ো করছে। আমরা শঙ্কিত ভোটের দিন কী ঘটতে যাচ্ছে!
গত বুধবার রাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সভাপতির বাসায় তল্লাশি চালানো হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, আরও নেতাকর্মীর বাসায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। আমরা জানি না, নির্বাচনে দিন কী হবে!
নির্বাচনের দিন পোলিং এজেন্ট দেওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা দেখছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ইশরাক বলেন, পোলিং এজেন্ট নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। কেন্দ্র পরিচালনায় কমিটি নিয়েও কোনো সমস্যা নেই। তাদের সঙ্গে নেতাকর্মী রয়েছে। তারা পুরোপুরি মাঠে থাকবেন এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তারা সচেষ্ট ও সক্রিয় রয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরপেক্ষ থাকলে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে বাধ্য। কিন্তু ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনের মতো তারা কোনো দলের পক্ষে সরাসরি ভূমিকা রাখলে নির্বাচন বিতর্কিত হবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, বিএনপি নেতা শহীদুল ইসলাম বাবুল, আবু নাছের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ভোটারদের ভালোবাসায় সিক্ত খোকার সহধর্মিণী : প্রচারের শেষ দিনে ইসলামপুরসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ইশরাক হোসেনের পক্ষে গণসংযোগ করেছেন তার মা ইশমত আরা। অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সহধর্মিণী ইশমত আরা গণসংযোগকালে সদ্য প্রয়াত স্বামীর প্রতি ভোটারদের ভালোবাসা দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার মোড় থেকে প্রচার শুরু করে নবাববাড়ি, ইসলামপুর, পাটুয়াটুলী, সদরঘাট ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচার ও গণসংযোগ করেন তিনি।
গণসংযোগে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, ইশরাকের ছোট ভাই ইশফাক হোসেনসহ পরিবারে সদস্য ও স্বজন এবং পুরান ঢাকার বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।