মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) রায় নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা হয়েছে। এতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা বন্ধে মিয়ানমারকে নির্দেশ দেওয়ার একটি প্রস্তাব তোলা হলেও তা পাস হয়নি। মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন ও আসিয়ানের সদস্য ভিয়েতনাম প্রস্তাবটিতে আপত্তি জানায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কূটনীতিকরা রুদ্ধদ্বার বৈঠক সম্পর্কে এ তথ্য জানিয়েছেন। চীন নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সদস্য ভিয়েতনাম এর অস্থায়ী সদস্য।
বৈঠক শেষে নিরাপত্তা পরিষদে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য দেশগুলো বুধবার এক যৌথ বিবৃতিতে আইসিজের আদেশ পালন করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতের এ আদেশ মানা মিয়ানমারের জন্য বাধ্যতামূলক।
গত ২৩ জানুয়ারি এক অবিস্মরণীয় আদেশে রাখাইনে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার জন্য চারটি আন্তর্বর্তী নির্দেশ দেন আইসিজে। নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবটি পাস হলে তা মানতে বাধ্য থাকত মিয়ানমার। আইসিজের আদেশ মানাও বাধ্যতামূলক। তবে তা না মানার নজিরও রয়েছে। অন্যদিকে নিজের আদেশ বা রায় মানতে বাধ্য কোনো ব্যবস্থা নেই আইসিজের।
ইইউর সদস্য ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম ও এস্তোনিয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা পরিষদের সাবেক সদস্য পোল্যান্ড যৌথ বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে ‘বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ’ নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানায়। রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণ দূর করতেও বৌদ্ধপ্রধান দেশটির প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারকে ‘অবশ্যই’ স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে এবং স্থায়ীভাবে রোহিঙ্গাদের নিজভূমে ফেরার উপযোগী পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তবে ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় বিবৃতিতে সই করতে পারেনি যুক্তরাজ্য, যদিও দেশটি প্রস্তাবটি উত্থাপনে জড়িত ছিল।