ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেছেন, “খেলাপি ঋণের জন্য সংসদে আমাকে অনেক কথা শুনতে হয়েছে আপনাদের জন্য।
“আমি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা করেছি, কিন্তু খেলাপি হইনি। আপনারা লোন দিচ্ছেন, খেলাপি হচ্ছে। আর খেলাপি হওয়ার কারণে সংসদে গালি শুনতে হয় আমাকে।”
বুধবার সংসদে সমালোচনাবিদ্ধ হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রায়াত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (বিডিবিএল) শাখা ব্যবস্থাপকদের সম্মেলনে একথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
আমি বিশ্বের এক নম্বর অর্থমন্ত্রী: মুস্তফা কামাল
এক বছর আগে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কোনোভাবে বাড়তে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু শুরুতে বেড়ে চললেও এখন তাতে লাগাম টানা হচ্ছে।
এই অনুষ্ঠানে গভর্নর ফজলে কবির বলেন, বিডিবিএলে খেলাপি ঋণ গত সেপ্টেম্বর থেকে কমে এখন ৩৮ দশমিক ২২ শতাংশ হয়েছে। এটি আরও কমিয়ে আনতে হবে।
“এক-তৃতীয়াংশের বেশি লোন খারাপ হয়ে যাবে, এই পরিস্থিতি কখনও গ্রহণ করা যায় না,” বলেন তিনি।
মন্দ ঋণ বিতরণে ব্যাংকারদের যারা জড়িত, তাদের শাস্তি দেওয়ার আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী কামাল।
তিনি বলেন, “ব্যাংকারদের মধ্যে যারা খারাপ, তাদের বিষয়ে গভর্নর বা মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেওয়ার আগে আপনারা নিজেরাই নিজেদের অ্যাসেসমেন্ট করে নিজরাই শাস্তি নির্ধারণ করতে পারেন।
“তাদের কাছে আমাদের আর কোনো সম্পদ তুলে দিয়েন না। তারা আবার নষ্ট করবে। সুতরাং তাদের কাছ থেকে সাবধান থাকতে হবে।”
দেশের অর্থনীতির চালচিত্র তুলে ধরে মুস্তফা কামাল বলেন, ২০০৯ সালের পর বিশ্বে এখন একটা অর্থনৈতিক মন্দা যাচ্ছে। গত বছর এমন কোনো দেশ পাওয়া যাবে না যাদের আমদানি-রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
“এখন আমাদের আমদানি-রপ্তানি নেতিবাচক অবস্থায় আছে। তবে বছর শেষে সেখান থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ সরকার কিছু সহায়তা দিচ্ছে, সহায়ক ভূমিকা রাখছে।”
ঢাকার মতিঝিলে বিডিবিএল ভবনের সম্মেলন কক্ষে এই অনুষ্ঠানে বিডিবিএল চেয়ারম্যান মো. মেজবাহউদ্দিন সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে গভর্নর ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রযুক্তি জ্ঞান বাড়ানোর উপর জোর দেন।
তিনি বলেন, “প্রযুক্তির সঙ্গে ঝুঁকিও থাকে। নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে আসে নতুন নতুন ঝুঁকি। ঝুঁকির ব্যাপারটাও খেয়াল রাখবেন।”