সদ্য সমাপ্ত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ‘কারচুপির চিত্র’ কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেছেন বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন।
রোববার বিকালে ঢাকার লেইক শোর হোটেলে ধানের শীষের এই দুই মেয়র প্রার্থী ঢাকায় কর্মরত কূটনীতিকদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
এই বৈঠকে অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, ডেনমার্ক, নরওয়ের রাষ্ট্রদূতসহ জার্মানি, তুরস্ক, ভারত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিলিয়ে ১৩টি দেশের বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা ইসমাইল জবিউল্লাহ, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শামা ওবায়েদ, আসাদুজ্জামান, জহিরউদ্দিন স্বপন, জেবা খান, মীর হেলালও ছিলেন।
বৈঠকে কূটনীতিকদের সামনে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা, ইভিএমে কারচুপি, কেন্দ্র দখল, সাংবাদিকদের উপর আক্রমণসহ নানা তথ্য-উপাত্ত এবং ভিডিও চিত্র উপস্থাপন করা হয় বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন।
বৈঠকের পর ঢাকা দক্ষিণে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন কথা বললেও উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল কথা বলতে অপরাগতা জানান। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলও কথা বলতে রাজি হননি।
ইশরাক বলেন, “দলের ফরেন এফেয়ার্স কমিটির পক্ষ থেকে একটা প্রেজেন্টেশন দেওয়া হয়েছে- কী কী ঘটনা নির্বাচনের দিন ঘটেছে। এর আগে আমরা গত ৫ তারিখে আপনাদের (গণমাধ্যম) সামনে যেটা বলেছি, সেটাই বিভিন্ন মিশনে যারা আছেন, তারা জানতে চেয়েছিল। সেটার প্রেজেন্টেশন আজকে আমরা করেছি।”
ভোটের ব্যবচ্ছেদ করে পুনর্নির্বাচন দাবি তাবিথ-ইশরাকের
কোন বিষয়গুলো ‘ফোকাস’ করেছেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “কারচুপির ইলেকশন, জালিয়াতির ভোট- এসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। তারা তো আমাদের উন্নয়ন সহযোগী দেশ তারা জানতে চেয়েছেন ইলেক্ট্ররাল প্রসেসটা কীভাবে সংঘটিত হচ্ছে।
“তারা আমাদের এখানে বিভিন্ন সময়ে ডেমোক্রেন্সির উপর প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে, তাদের একটা আগ্রহ থাকে যে এত বড় নির্বাচন হয়ে গেল, সেটা কীভাবে হল? সেগুলোর বিষয়ে আমরা তাদেরকে প্রেজেন্টেশন দিয়েছি।”
এই প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের নানা বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে ইশরাক বলেন, “একটা কথা আমি বলতে চাই, এগুলো নিয়ে পরে বলবে যে আমরা অভিযোগ করছি, এই সেই। আমরা কোনো অভিযোগ করছি না। তারা জানতে চেয়েছে, আমরা তাদেরকে জানাচ্ছি। তাদের কাছে অভিযোগ করে তো কোনো লাভ নাই।”
বক্তব্য শুনে কূটনীতিকরা কী বলেছেন- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “তারা (কূটনীতিকরা) নির্বাক ছিলেন। তারা খুবই অবাক হয়েছে যে এভাবে একটা কারচুপি হতে পারে এত বড় একটা নির্বাচনে।
“সাংবাদিকদের আহত করা হয়েছে, এটাতে তারা (কূটনীতিকরা) ব্যথিত হয়েছে। আমাদের পোলিং এজেন্টের আহত করা হয়েছে, সেটাতে তারা ব্যথিত হয়েছে। আমরা বিভিন্ন পরিসংখ্যান দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি, কীভাবে ফলাফল স্থগিত করে পরবর্তীতে পরিবর্তন করা হয় গভীর রাতে। এসব শুনেছে, তারা নির্বাক থেকেছেন।”
গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়। এর ফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলেছে বিএনপি।