বাংলাদেশে রপ্তানিতে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের খবরে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। ফলে একদিনের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি দিনাজপুরের হিলিতে প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। গত বৃহস্পতিবার এই পেঁয়াজ ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
হিলি বাজারের আড়তদার দেলোয়ার হোসেন ও মঈনুলসহ অনেকে জানান, ভারত পাঁচ মাস ধরে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করেনি। এর ফলে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। গত মাস থেকে প্রকারভেদে ৭০ থেকে ১২০ টাকায় পেঁয়াজ বেচাকেনা হচ্ছে। বুধবার অবশেষে ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় বাজারে পেঁয়াজের দাম পড়তে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার দেশি বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হলেও শুক্রবার সকাল থেকে কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। তবে বেশি কমেছে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম। প্রকারভেদে এ পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকার স্থলে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। আর চোরাইপথে আসা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা নজির উদ্দিন ও মোমেনা বিবি জানান, তিন দিন আগে দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকায় কিনতে হয়েছে। শুক্রবার সকালে কিনতে এসে তারা দেখেন, একই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। বাজার ঘুরে জানতে পারেন, এখন নাকি ভারত থেকে পেঁয়াজ আসবে তাই দাম কম। আরেক ক্রেতা ছানোয়ার হোসেন বলেন, পেঁয়াজ কিনতে এলে এখন কিছুটা হলেও স্বস্তি পাওয়া যাবে।
বুধবার ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বলা হয়, বিভিন্ন রাজ্যে পেঁয়াজের আশানুরূপ ফলন হয়েছে। বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার কৃষকরা পেঁয়াজের ভালো ফলন পেয়ে খুশি। কিন্তু ন্যায্য দাম না পেয়ে এরই মধ্যে কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। তাই কৃষকদের স্বার্থে এবং পেঁয়াজের দরপতন ঠেকাতে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি প্রক্রিয়া শুরু করতে অতি দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন জানান, ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে কোনো চিঠি পাইনি। তবে আশা করা হচ্ছে, খুব দ্রুত সময়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে।
অভ্যন্তরীণ সংকট দেখিয়ে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। এরপর থেকে বাড়তে থাকে ভারতীয়সহ দেশি পেঁয়াজের দাম।