চীনে সম্ভাব্য করোনাভাইরাস আক্রান্তদের কোয়ারেন্টিনে রাখতে ব্যবহৃত হোটেল ধসের ঘটনায় অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে, জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ৪২ জনকে।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া জানিয়েছে, জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফুজিয়ান প্রদেশের চুয়ানজু শহরে পাঁচতলা ওই হোটেল ধসে পড়লে অন্তত ৭০ জন ভেতরে আটকা পড়েন।
শিনজিয়া নামের হোটেলটি সম্ভাব্য করোনাভাইরাস আক্রান্তদের কোয়ারেন্টিন রাখতে ব্যবহৃত হচ্ছিল বলে কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র পিপলস ডেইলির খবরে জানানো হয়।
মাত্র দুই বছর আগে চালু হওয়া ওই হোটেলে অতিথিদের জন্য কক্ষ আছে মোট ৮০টি। কী কারণে হোটেলটি ধসে পড়ল তা এখনো স্পষ্ট নয়।
একজন নারী রাতে বেইজিং নিউজকে বলেন, তার বোনসহ কয়েকজন আত্মীয় শিনজিয়া হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। আর তিনি নিজে অন্য একটি হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে আছেন।
“আমি ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। ওরা ফোন ধরছে না।… আমার খুব টেনশন হচ্ছে, বুঝতে পারছি না কী করব। ওরা সুস্থই ছিল, প্রতিদিন তাপমাত্রা মাপা হচ্ছিল। তাতে মনে হচ্ছিল সব ঠিকঠাকই আছে।”
একজন প্রত্যক্ষদর্শী সোশাল মিডিয়ায় ভিডিও পোস্ট করে নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি তখন কাছের একটি গ্যাস স্টেশনে। হঠাৎ বিকট শব্দে তাকিয়ে দেখেন পুরো হোটেল ভবনটি ধসে পড়ছে।
“চারদিকে ধুলার মেঘ, বাতাসে কাচের টুকরো ছিটকে যাচ্ছে। আমি এতটাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে আমার হাত-পা কাঁপছিল।”
ফুজিয়ান ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, ৮৪৮ জন উদ্ধারকর্মী সাতটি প্রশিক্ষিত কুকুর নিয়ে ওই হোটেলের ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।
মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্ম উইবুতে আসা ভিডিওতে দেখা যায় ওই হোটেল ভবনের সামনের অংশ ধসে পড়ায় ইস্পাতের কাঠামো বেরিয়ে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে একজনকে বের করে এনে অ্যাম্বুলেন্সে তুলছেন।
নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রভূমি উহান থেকে চুয়ানজুর দূরত্ব প্রায় ৬০০ মাইল। শনিবার পর্যন্ত সেখানে ৪৭ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
পুরো ফুজিয়ান প্রদেশে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় তিনশ মানুষ। আর আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ১০ হাজার ৮১৯ জনকে আলাদাভাবে পর্যবেক্ষণে (কোয়ারেন্টিন) রাখা হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে ১ লাখ ৫ হাজারের বেশি মানুষ এ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে; মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৫৯৫ জনের।