সকালের নাস্তা বাদ দিলে শরীরে নানান প্রভাব পড়ে। যার বেশিরভাগই নেতিবাচক।
তাড়াহুড়ার কারণে সকালের নাস্তা বাদ দেওয়া মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। আবার ওজন কমানোর উদ্দেশ্যে অনেকেই সকাল না খেয়ে থাকেন। সকালের নাস্তার গুরুত্ব নিয়ে জোরালো মতবিরোধ আছে পুরো পৃথিবী জুড়েই।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হল সকালের নাস্তা বাদ দেওয়ার ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে।
হৃদরোগের ঝুঁকি: স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল নিয়মিত সকালের নাস্তা খাওয়া।
যারা সকালের নাস্তা এড়িয়ে চলেন তাদের হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে। কারণ দীর্ঘক্ষণ অভুক্ত থাকলে শরীরের উপর প্রচণ্ড ধকল যায়, স্বাভাবিক জৈবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বেগ পেতে হয় বেশি। এই বাড়তি ধকলের কারণে বিপাক ও হজমক্রিয়ায় তারতম্য দেখা দেয়, যা পক্ষান্তরে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি: সকালের নাস্তা না খেলে স্বভাবতই দুপুরে আপনার প্রচণ্ড ক্ষুধা লাগবে, খাওয়ার পরিমাণও বেড়ে যাবে। দীর্ঘসময় অভুক্ত থেকে তারপর স্বাভাবিকের চাইতে বেশি খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। এই বিশৃঙ্খলা ডেকে আনতে পারে ‘ইনসুলিন ইনটলারেন্স’। যা পরে ডেকে আনতে পারে ডায়াবেটিস।
ওজন বৃদ্ধি: ওজন কমানোর উদ্দেশ্যে সকালে না খেয়ে থাকার ফল উল্টাও হতে পারে। কারণ সকালে অভুক্ত থেকে ক্ষুধা বাড়ল। পরে সারাদিন অতিরিক্ত খাওয়া হল, সেই সময়টায় যখন আপনি বসে কাজ করছেন। আবার খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ না করায় স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ক্যালরি গ্রহণ করে ফেলাও অস্বাভাবিক নয়।
বিপাক প্রক্রিয়া ধীর: সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর হজমক্রিয়া অত্যন্ত ধীর গতিতে চলে। এসময় তাকে হজম করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালরি সরবরাহ করা না হলে হজমক্রিয়া মন্থর থাকতে থাকতে ক্রমেই তার স্বাভাবিক হজমের গতি হারাতে থাকে। এমনটা লম্বা সময় চলতে থাকলে একসময় শরীর ক্যালরি খরচ করার ক্ষমতা কমে যায়। সেই সঙ্গে হজমের ক্ষমতাও। তাই হজমক্রিয়াকে শক্তিশালী রাখতেও সকালের নাস্তা জরুরি।
মেজাজের সমস্যা: পেটে ক্ষুধা থাকলে মেজাজ খিটখিটে থাকে এটা কমবেশি সবাই জানেন ও বোঝেন। সারারাত ঘুমানোর পর সকালেও না খেয়ে থাকলে মেজাজ খারাপ থাকাটাই স্বাভাবিক। এছাড়াও কর্মশক্তির অভাবের কারণে মাথাব্যথা দেখা দিতে পারে, যা মেজাজকে আরও খিটখিটে করবে। ফলে দিনের যেই সময়টায় আপনার সবচাইতে কর্মক্ষম থাকা উচিত ছিল, সেসময় শুধুই না খেয়ে থাকার কারণে বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে কাজের মানসিকতা হারাচ্ছেন।
শক্তি কমা: যারা সকালে ব্যায়াম করেন তাদের জন্য সকালের নাস্তা বাদ দেওয়া আরও বেশি ক্ষতিকর। কারণ পেটে খাবার না থাকায় ব্যায়াম করার কোনো শক্তিই শরীরে থাকে না। এরপর টুকটাক ব্যায়াম করলে কর্মশক্তি বাড়ার পরিবর্তে আরও কমে আসবে। ফলে দিনের মাঝামাঝি সময়ে শরীর একেবারে এলিয়ে পড়বে।
অর্থাৎ এই একবেলার খাবার বাদ দেওয়া কুফল তাড়িয়ে বেড়াবে সারাদিন, সঙ্গে থাকবে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাবও। এবার বিবেচনা আপনার।