ছোটবেলায় স্থির করা জীবনের লক্ষ্য বড় হতে হতে অনেকের ক্ষেত্রে পরিবর্তিত হয়ে যায়, কিন্তু তিনি একটু ব্যতিক্রম। তার আজীবনের স্বপ্ন একজন কণ্ঠশিল্পী হওয়ার। সে স্বপ্ন দেখেছিলেন মাত্র চার বছর বয়সে। সংগীতের সাধনায় নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন। তাই তো সেরা শিল্পীদের তালিকায় উজ্জ্বল তার নাম। এতক্ষণ যার কথা বলা হয়েছে তার নাম দিলশাদ নাহার কনা। বর্তমানে স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটালেও থেমে নেই তার নতুন গান রেকর্ডিং। অডিও, প্লে-ব্যাক, জিঙ্গেল কিংবা নাটকের গান- সব মাধ্যমে তিনি সরব। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কখনও পিছিয়ে পড়েননি। গানে গানেই কেটে যায় তার সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা-রাত। তারপরও কনার চোখেমুখে কেউ কখনও খুঁজে পাননি ক্লান্তির ছায়া। এভাবেই কেটে গেছে দেড় যুগেরও বেশি সময়। তিনি গড়েছেন ইউটিউবে ‘ভিউ’-এর রেকর্ড। কোটির ক্লাবে যুক্ত হয়েছে তার গাওয়া চারটি গান। নারী কণ্ঠশিল্পীর মধ্যে সর্বোচ্চ ভিউয়ের সাফল্য কেমন উপভোগ করেন?
‘সংগীত ক্যারিয়ারে ভিউ নিয়ে কখনই ভাবিনি। মনোযোগ সহকারে গান গাওয়ার চেষ্টা করেছি। এ চলার পথে হয়তো কিছু সাফল্য এসেছে। শ্রোতারা আমার গানের প্রাণ। তাদের জন্য এগিয়ে যাওয়ার উৎসাহ পাই। শিল্পী জীবনের বড় প্রাপ্তি হলো শ্রোতার ভালোবাসা। – বলেন কনা। বেশ বিরতি দিয়ে নতুন গান করলেন কনা। গীতিকার রবিউল ইসলাম জীবনের কথায় রিজভী ওয়াহিদের সঙ্গে তিনি গাইলেন দ্বৈত গান। তাদের গাওয়া ‘গাঙচিল মন’ শিরোনামের গানটির রেকর্ডিং শেষ হয়েছে। সুর করেছেন নাজির মাহমুদ।
সংগীতায়োজনে মুশফিক লিটু। কিছুদিনের মধ্যেই রিজভী ওয়াহিদের ইউটিউব চ্যানেল ‘আরডব্লিউ এন্টারটেইনমেন্ট’ থেকে ভিডিও আকারে গানটি প্রকাশ করা হবে। ভিডিওটির শুটিং হবে অস্ট্রেলিয়ায়। স্টেজ শো, অডিও, জিঙ্গেল ও বিজ্ঞাপনে কণ্ঠ দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটলেও চলচ্চিত্রের গানে আগের চেয়ে এখন বেশ মনোযোগী তিনি। সম্প্রতি তিনি প্লে-ব্যাক করেছেন ‘এনকাউন্টার’, ‘লাইভ ফর লাইফ’, ‘বিশ্বসুন্দরী’, ‘বিক্ষোভ’, ‘জিন’, ‘লন্ডন লাভ’ ছবিতে।
নিজের ইউটিউব চ্যানেল ও বিভিন্ন কোম্পানির ব্যানারেও গান প্রকাশ করছেন কনা। শিগগিরই নিজের চ্যানেলে নতুন একটি গান ভিডিওসহ প্রকাশ করবেন বলে জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে কনা বলেন, এখন স্টেজ শো নিয়ে বেশি ব্যস্ত। ফাঁকে ফাঁকে গানের কাজ করছি। বেশ বিরতির পর সম্প্রতি একটি গানে ভয়েস দিয়েছি। গানটি লিখেছেন কলকাতার প্রিয় চট্টোপাধ্যায়, সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন আকাশ সেন। ভিডিওসহ গানটি প্রকাশ করতে চাই। সময়ের অভাবে গানটির ভিডিও করতে পারিনি।
আশা করছি, শিগগিরই আমার নিজের ইউটিউব চ্যানেল থেকে এটি প্রকাশ হবে। গত বছরের এপ্রিলে ব্যাচেলর জীবনের ইতি টেনেছেন তিনি। দীর্ঘ সাত বছরের প্রেমিক গহীনকে বিয়ে করেছেন। বিয়ের পর্ব তো শেষ। সংসার জীবন কেমন চলছে? এখনও শ্বশুরবাড়িতে উঠিনি। মা-বাবার সঙ্গেই আছি। এখান বাকি রয়েছে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের দিন তারিখ দুই পরিবারের সদস্যরা মিলে ঠিক করবেন। পারিবারিকভাবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পর শ্বশুরবাড়িতে উঠব।
এতদিন সবার এক প্রশ্ন ছিল, বিয়ে করছি কবে? এখন প্রশ্ন-বিয়ের রিসিপশন কবে? হ্যাঁ, শিগিগিরই রিসিপসনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হবে। তখন দাওয়াত পাবেন। টিভি, মঞ্চ আর প্লে-ব্যাক- সব মাধ্যমেই গান করছেন। কোন মাধ্যমে গান গাইতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন? এমন প্রশ্নে কনা বলেন, প্লে-ব্যাক আমার কাছে খুব প্রিয় একটি জায়গা। কারণ এই জায়গাটায় আমি ইমাজিন করে নিজের মনের মতো করে গাইতে পারি। স্টেজ শো খুব এনজয় করি। স্টেজ শোতে সবচেয়ে ভালো লাগে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া। যেটা সঙ্গে সঙ্গে দেখতে পেরে ভীষণ অনুপ্রাণিত এবং বিনোদিত হই। প্রত্যেকটি মাধ্যমেই আলাদা আলাদা ভালো লাগা কাজ করে।