করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ বিদেশি কূটনীতিকদের অবহিত করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এক ব্রিফিংয়ে ঢাকার বিভিন্ন মিশনের কূটনীতিকদের করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে কূটনীতিকদের আশ্বস্ত করেন তিনি। তবে সূত্র জানিয়েছে, ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কূটনীতিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
কূটনৈতিক ব্রিফিং শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানান, কূটনীতিকদের জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মাত্র আটজন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রথম শনাক্ত হওয়া তিনজন সুস্থ হয়েছেন। প্রথম আক্রান্তদের প্রত্যেকেই বিদেশ থেকে এসেছেন। পরবর্তী সময়ে আক্রান্তদের কয়েকজন আত্মীয়ও আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় কোয়ারেন্টাইনে রেখে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি জানান, এরই মধ্যে বিদেশ থেকে যে-ই বাংলাদেশে আসুক, তাকে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রত্যেক সরকারি হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য বিশেষ ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জনসাধারণকে জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শসহ করোনা সংক্রমণ এড়াতে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহায়তার জন্য কূটনীতিকদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে করোনা প্রতিরোধে ঢাকার কূটনীতিকদেরও সহযোগিতা চান।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চান। এ সময় ড. মোমেন জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশেষভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া একাধিক দেশের কূটনীতিকরা বাংলাদেশে ঘনবসতি ও অধিক জনসমাগম এলাকার কথা তুলে ধরে করোনা সংক্রমণ বিস্তারে ঝুঁকির কথা তুলে ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
ব্রিফিংয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্য, কানাডা, ভারত, চীন, রাশিয়া, মালয়েশিয়া, নেপাল, ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন মিশনের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এ দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের ভিসার মেয়াদ তিন মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি ঢাকায় বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে।