প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে প্রাণ সংহারি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছেন বাংলাদেশি পর্বতারোহী ওয়াসফিয়া নাজরীন; যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেস থেকে তারকাদের সঙ্গে ‘কোভিড-১৯ আড্ডা’ শিরোনামে এক ফেইসবুক লাইভে জানালেন তার করোনাকালের দিনলিপি।
হাওয়াই থেকে ১২ মার্চ লস অ্যাঞ্জেলেসে ফেরার পরদিন ১৩ মার্চ থেকে তার মধ্যে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়; ১৭ মার্চ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর থেকেই বাসাতেই অবস্থান করছেন তিনি।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টায় তার সঙ্গে ‘কোভিড-১৯ আড্ডায়’ অংশ নেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা, সংগীতশিল্পী শারমিন সুলতানা সুমি, সংগীতশিল্পী লাবিব কামাল গৌরব ও নাসার নভোচারী রন গ্যারান।
প্রথম সপ্তাহের শারীরিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে ওয়াসফিয়া বলেন, “প্রথম কয়েকদিন ঘুমাতে পারিনি। মনে হচ্ছিল, ঘুমাতে গেলেই দম বন্ধ হয়ে আমি মারা যাব। আর বেশিরভাগ সময় মুখ ও শরীর ভয়ঙ্করভাবে কাঁপছিল। চিকিৎসক আমাকে চোখ বন্ধ করতে বলেছিলেন; আমি চোখ বন্ধও করতে পারছিলাম না।”
পরে ভয়কে জয় করে মানসিক শক্তি দিয়ে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে বেঁচে থাকার শামিল হয়েছেন সাত মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ জয়ী ওয়াসফিয়া; যার প্রতিটি ভোর শুরু হয় নতুনভাবে।
সামাজিক যোগামাধ্যমে করোনাভাইরাস নিয়ে ভুয়া পোস্ট মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বিবেচনায় ফেইসবুকসহ বেশ কয়েকটি অ্যাপ মোবাইল থেকে সরিয়ে ফেলেছেন।
“করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে মেসেঞ্জারে শত শত পরামর্শ আসছে ঢাকা থেকে; এটা করো, সেটা করো, এটা খাও, ওটা খাও-আরও কত কী! বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিলাম। পরে ওই অ্যাপগুলো ডিলিট করে এখন নিজের দিকে মনোযোগী হয়েছি।”
করোনাভাইরাসের ভয় থেকে দূরে থাকতে গুজবে কান না দিয়ে এটি নিয়ে আগে জানার তাগিদ দেন তিনি; ফলে কেউ ভীতি ছড়ালেও সহজেই বুঝতে পারা সহজ হবে।
“এই করোনাভাইরাসের মধ্যেই দেখলাম, টেলিভিশনে অনেক শিক্ষিত মানুষজন উদ্ভট কথা বলতেছে। কেউ আবার রোড সেফটির সঙ্গে তুলনা করতেছে।”
আগের তুলনায় তার শরীরে ভাইরাসের প্রকোপ কম থাকলেও তিনি এখনও পুরোপুরি ভাইরাস মুক্ত নন।
সব উপসর্গ চলে যাওয়ার পর তিনদিন চিকিৎসকরা তাকে পর্যবেক্ষণ রাখবেন; তারপর নিশ্চিত হওয়া যাবে তিনি পুরোপুরি ভাইরাস মুক্ত হয়েছেন কি না।