জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আরেক পলাতক খুনি রিসালদার (বরখাস্ত) মোসলেম উদ্দিন খান ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে খবর এসেছে সে দেশের সংবাদমাধ্যমে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, সরকার নিশ্চিত হওয়ার পরই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যে ছয় আসামি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন, তাদের মধ্যে মোসলেম উদ্দিন একজন।
ওই ছয়জনের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে গ্রেপ্তার হওয়ার পর গত ১১ এপ্রিল মধ্যরাতে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
মাজেদ পরিচয় গোপন করে ২০ বছরের বেশি সময় ধরে কলকাতায় পালিয়ে ছিলেন। তার মত মোসলেম উদ্দিনও ভারতে পালিয়ে ছিলেন এবং উত্তর চব্বিশ পরগনা থেকে তাকে আটক করা হয়ে থাকতে পারে বলে খবর দিয়েছেন ভারতীয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার।
সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার লিখেছে, মাজেদকে জেরা করে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা মোসলেম উদ্দিনের ভারতে অবস্থানের তথ্য পান।“এই প্রাক্তন সেনা অফিসারকে উত্তর চব্বিশ পরগনায় তার ডেরা থেকে আটক করা গিয়েছে বলেও সূত্রের দাবি। আবার অন্য একটি সূত্রের খবর, মাজেদ আটক হওয়া মাত্রই নিজের মৃত্যু-সংবাদ ছড়িয়ে গা-ঢাকা দিয়েছে মোসলেম উদ্দিন।”
মোসলেম উদ্দিন আটক হয়েছেন কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সোমবার সকালে বলেন, “আমরা শুনেছি, কিন্তু কনফার্ম করে বলতে পারছি না। নিশ্চিত হলে তখন জানাব।”
ওই খবর শোনার পর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতে যোগাযোগ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “যোগাযোগেতো আমাদের লোক লেগেই আছে।”
পুলিশ সদরদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মহিউল ইসলাম বলেছেন, ইন্টারপোলের ভারতীয় শাখা ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) মোসলেম উদ্দিন খান গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য এখনও বাংলাদেশকে দেয়নি।
তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, “মোসলেম উদ্দিন সন্দেহে ভারতে একজনকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং নিশ্চিত হলে সরকারিভাবে ঘোষণা করা হবে।”
ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার লিখেছে, লকডাউনের সময় সেখান থেকে মোসলেম উদ্দিনকে বাংলাদেশে আনা সমস্যা হতে পারে বলে ঢাকা বিষয়টি ভারতীয় গোয়েন্দাদের জানায়।
“ভারতীয় গোয়েন্দারা এই খুনিকে কার্যত তাড়িয়ে সীমান্তের কোনো একটি অরক্ষিত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। তবে সরকারিভাবে কিছুই স্বীকার করা হয়নি। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনার একটি আধা শহরে ইউনানি চিকিৎসক সেজে ভাড়া থাকছিল মোসলেম উদ্দিন।
“সে-ও ফেরার হওয়া ফাঁসির আসামি। ১৯৭৫-এর ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে হানা দেওয়া দলটির সামনের সারিতে ছিল মোসলেম উদ্দিন। অনেকের দাবি, মোসলেম উদ্দিনই গুলি করে হত্যা করেছিল বঙ্গবন্ধুকে।”