অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে পারবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

download-(4)-samakal-5eab0b134bdaf

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) একতরফাভাবে এ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত দেওয়ায় ক্লাস চালু রাখা হলেও সব ধরণের পরীক্ষা ও মূল্যায়ন বন্ধ রাখা হয়। এবার অনলাইনে মূল্যায়ন ও ভর্তির প্রশ্নে নীতিগত একমত হয়েছেন উচ্চ শিক্ষার নীতি নির্ধারকরা।

বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি, বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির (এপিইউবি) সভাপতি এবং পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এক অনলাইন সভায় (ভিডিও কনফারেন্সে)এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এ সভায় অংশ নেন।

এতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যে ইউজিসি থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একটি গাইডলাইন দেওয়া হবে। এতে অনলাইনে ক্লাস, পরীক্ষা গ্রহণ, মূল্যায়ন ও ফলপ্রকাশ এবং ভর্তি পদ্ধতির বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হবে। এরপরই এ কার্যক্রম শুরু করতে পারবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

সভা শেষে বৃহস্পতিবার রাতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাদের সংগঠন এপিইউবির সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, শিক্ষামন্ত্রী আগামী দিনের সব কার্যক্রম অনলাইনে পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।

বিকাল ৪টার দিকে এ সভা শুরু হয়ে সোয়া ৬টায় শেষ হয়। এতে শিক্ষামন্ত্রী এবং উপমন্ত্রী ছাড়াও যার যার বাসা থেকে যুক্ত হন ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান তামারা আবেদ, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল। এছাড়া এতে ইউজিসির তিন সদস্য, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ভিসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র পরিচালকও এতে যুক্ত হন বলে জানা গেছে।

সভা সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের চলমান সাধারণ ছুটিতে দেশের উচ্চশিক্ষার ক্ষতি পোষাতে দুইধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়া হবে। এরপর বিভিন্ন ধরনের ছুটি কমিয়ে ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ অন্যান্য কর্মদিবসে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পোষানো হবে। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে লেখাপড়া পরিচালনা চালিয়ে যাবে। পাশাপাশি চালাবে ভর্তি কার্যক্রম। তবে সেমিস্টারের মূল্যায়ন বা পরীক্ষার ব্যাপারে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ইউজিসি একটি গাইডলাইন প্রকাশ করবে।

সূত্র জানায়, সভায় করোনাভাইরাসের চলতি ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবনের ক্ষতি পোষাতে করণীয় নির্ধারণী বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এবারের দৃষ্টান্ত নিয়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের আপদকালীন সময়ে শিক্ষাথীদের লেখাপড়া অব্যাহত রাখতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের অবকাঠামো ব্যবস্থা গড়ে তোলার ব্যাপারেও বৈঠকে সবাই একমত হন।

সভার বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ছুটিতে সৃষ্ট পরিস্থিতি, লেখাপড়ার ক্ষয়ক্ষতি, ভবিষ্যতে করণীয় ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে আমরা আগে কিছুটা অনঢ় ছিলাম। এখন বর্তমান বাস্তবতার আলোকে কিছুটা নমনীয় হতে হয়েছে। এই বৈঠকের উপর ভিত্তি করে আমরা (ইউজিসি) আগামী সপ্তাহে একটি নির্দেশনা জারি করবো।

জানা গেছে, সভায় দুর্বল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আর্থিক সহযোগিতার জন্য স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে ইতিপূর্বে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির আবেদনের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে।

Pin It