কারও শরীরে নতুন করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে গোপন না করে জরুরি ভিত্তিতে নমুনা পরীক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শনিবার সকালে নিজের সরকারি বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সরকারের কোভিড-১৯ টেস্টিং ক্যাপাসিটি অনেক বেড়েছে, অনেকের করোনাভাইরাসের উপসর্গ, লক্ষণ দেখা দিলেও টেস্ট না করিয়ে গোপন রাখছে, এতে বিপদ ডেকে আনছে।
“উপসর্গ বা লক্ষণ প্রকাশ পেলে সাথে সাথে হটলাইনে বা হাসপাতালে যোগাযোগে করার বিষয়টা সবাইকে লক্ষ্য রাখতে অনুরোধ করছি। গোপন না করে জরুরিভিত্তিতে টেস্ট করানোর আহ্বান জানাচ্ছি।”
বর্তমানে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মোট ৩১টি প্রতিষ্ঠানে কোভিড-১৯ এর নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকার বাইরে রয়েছে ১৬টি প্রতিষ্ঠান।
সংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের তার উপর আস্থা রাখার আহ্বান জানান।
ত্রাণ কার্যক্রমে পরিবহন শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করাকে গুরুত্ব দিতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
“জেলা প্রশাসন বা উপজেলার মাধ্যমে তালিকা অনুযায়ী যে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলছে, এতে পরিবহন শ্রমিকসহ অন্যান্য শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। জেলা উপজেলা প্রশাসন আশা করি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন।”
গার্মেন্ট মালিকদের প্রতিশ্রুত রক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “তৈরি পোশাক কারখানাগুলো চালু করার আগে মালিকরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এই সংকটে কোনো প্রকার শ্রমিক ছাটাই বা লে-অফ করা হবে না। ঢাকায় অবস্থানরত শ্রমিকদের দিয়েই কারখানা পরিচালনা করবে। বিভিন্ন জেলা এবং গ্রামে অবস্থান করা শ্রমিকদের বেতনের একটি অংশ দেয়া হবে। তাদের ঢাকায় আসতে নিরূৎসাহিত করা হবে।
“প্রকৃতপক্ষে আমরা দেখছি দলে দলে প্রতিদিন বিভিন্ন উপায়ে শ্রমিকরা ঢাকায় ফিরছেন; তারা বলছেন, অফিস থেকে ডাকা হয়েছে। আবার গতকাল শুনলাম গাজীপুরের একটি কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে, ছাঁটাই করা হয়েছে শ্রমিকদের। এটা তো হওয়ার কথা ছিল না?”
তিনি বলেন, “সরকার এই খাতে সুরক্ষা দিতে ইতোমধ্যে নিম্ন সুদে প্রণোদনাসহ রপ্তানি খাতে সহযোগিতাসহ নানামুখি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানদের টেলিফোনে অনুরোধ জানিয়েছেন।
“আমরা আশা করি, বিশ্বাস করি এই সংকটে পোশাক শিল্পের মালিকগণ দয়ার মানসিকতা সৃষ্টি করে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করবেন। আপনারা জানেন শেখ হাসিনা সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে, আপনারা শ্রমিক-কর্মী ভাইবোনদের পাশে থাকুন, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুন। শ্রমিক ছাঁটাই বা ফ্যাক্টরি লে-অফ থেকে বিরত থাকুন।”
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া পুলিশ, ডাক্তার, সাংবাদিক, স্বাস্থ্যকর্মীর আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোকার্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান ওবায়দুল কাদের।
“দেশ ও জাতির এই সংকটকালে যারা নিবেদিত প্রাণ, নিশ্চয়ই জাতি তাদের যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করবে,” বলেন ওবায়দুল কাদের।