ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানা থাকলেও এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা অনেকেরই নেই।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায় হলো ‘ব্লাড সুগার’ বা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা। রক্তে শর্করা বেশি হলে রক্তনালী, স্নায়ু এবং বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তাই কার্যকরভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রতিটি মানুষকেই রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি হওয়ার লক্ষণগুলো নিজেই শনাক্ত করা জানতে হবে।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হল এমন ছয়টি পূর্বাভাস সম্পর্কে।
ঘন ঘন প্রস্রাব: যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি তাদের প্রস্রাবের বেগ দেখা দেওয়ার মাত্রা বেড়ে যায়। একজন সুস্থ মানুষ দিনে গড়ে চার থেকে সাত বার মূত্রত্যাগ করে থাকেন। তবে যার রক্তে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিক, তার ক্ষেত্রে সেটা অনেক বেশি। কারও আবার প্রায় সারাদিনেই বেগ লেগেই থাকে। এর কারণ হল, বৃক্ক রক্তে থাকা অতিরিক্ত শর্করা সামলাতে পারে না। আর তা শরীর থেকে বের করে দেওয়ার একমাত্র উপায় হল মূত্রত্যাগ।
অবসাদ: অনবরত অবসাদগ্রস্ত অনুভব করা রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। এটা শনাক্ত করার উপায় হল যখনই কোনো কিছু খাওয়া হয় তখনই নিজেকে প্রচণ্ড ক্লান্ত মনে হয়। ‘কার্বোহাইড্রেইট’ সমৃদ্ধ খাবার খেলে ক্লান্তির মাত্রা আরও বেড়ে যায়। আপনার পরিস্থিতির সঙ্গে এর মিল পেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, ডায়াবেটিস পরীক্ষা করান।
প্রচণ্ড পিপাসা: রক্তে শর্করা বেশি হওয়ার প্রভাবে মূত্রত্যাগের মাত্রা যেমন বাড়ে, স্বভাবতই তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে পানির পিপাসা। ক্রমেই এই চক্র আপনার জীবনের নিত্যসঙ্গীতে পরিণত হতে থাকে। অতিরিক্ত পানির পিপাসার এই ঘটনাকে রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি হওয়া বা ‘হাইপারগ্লাইসেমিয়া’র প্রত্যক্ষ পূর্বাভাস হিসেবে বিবেচনা করা যায় না। তবে অন্যান্য লক্ষণের সঙ্গে যদি এই সমস্যাও থাকে তবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার সময় এসেছে।
ঝাপসা দৃষ্টিশক্তি: এটাও রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার উল্লেখযোগ্য লক্ষণ। এই বিষয়ে বিশেষভাবে সচেতন থাকতে হবে। এর কারণ হল রক্তের বাড়তি শর্করা আর পানি চোখের মাঝামাঝি অংশে আটকা পড়ে। আর সেকারণেই চোখে ঘোলাটে দেখা শুরু হয়।
মাথাব্যথা: মাথাব্যথা বিভিন্ন কারণেই হতে পারে। তাই এখানেও খেয়াল রাখতে হবে ডায়াবেটিসের অন্যান্য উপসর্গগুলো আছে কি-না। যদি থাকে তবে পরীক্ষা করাতে হবে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সংক্রমণ বার বার ফিরে আসা: ডায়াবেটিস রোগের অন্যতম প্রধান সমস্যা হল, রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। ফলে যে কোনো সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করা কঠিন হয়ে পড়ে এবং রোগাক্রান্ত হওয়ার মাত্রা বেড়ে যায়। একই রোগ বারবার ফিরে আসতে পারে, সহজে রোগমুক্তি পাওয়া যায় না।
এসব উপসর্গকে অবহেলা করলে ভবিষ্যতে মারাত্বক শারীরিক সমস্যার কবলে পড়তে পারেন। তাই উপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে দ্রুত।