আসছে জুন মাসের শুরুতেই ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, করোনা কারণে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাতে বাজেট পেছানোর সুযোগ নেই। কারণ বাজেট একটি সাংবিধানিক বিষয়। সাংবিধানিক ভাবেই জাতীয় বাজেট সংসদে নিয়ে আসতে হবে। বাজেট ছাড়া একটি পয়সাও ব্যয় করার সুযোগ নেই।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সাথে মোবাইলে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।
উল্লেখ্য, বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ মেয়াদে ছুটি ও বিভিন্ন স্থানে লকডাউনের কারণে প্রাক বাজেট আলোচনা আনুষ্ঠানিকভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। অর্থমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনলাইনে সকলের কাছ থেকে মতামত নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটটি হচ্ছে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। আমাদের অন্যান্য বছরের সাথে এবারের বাজেটে অনেক তফাৎ রয়েছে, সেটি হল করোনা ভাইরাস। সাধারণত বাজেটের আগে আমরা দেশের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ সকলের সাথে আলোচনা করে মতামতের ভিত্তিতে বাজেট ডকুমেন্ট তৈরি করে থাকি। যাতে সকলের কাছে বাজেট গ্রহণযোগ্য হয়। এবার সেই সুযোগটি নেই। আমরা সরাসরি মতবিনিময় করতে পারছি না। আমাদের অর্থনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আমরা বাজেটের সাথে সম্পর্কিত করতে চেষ্টা করতাম। দীর্ঘ দিনের এই ধারাবাহিকতা এবার রক্ষা করা যাচ্ছে না। যেহেতু আমাদের ওয়েবসাইট আছে। তাছাড়া ডিজিটাল পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকেই অবহিত রয়েছে। তাই দল-মত নির্বিশেষে আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট তারা কিভাবে দেখতে চান সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে মতামত দেওয়ার আহ্বান করা হয়েছে। এর ফলে আমরাও উপকৃত হবো বলে মনে করি।
তিনি বলেন, আমরা একটা টিম তৈরি করেছি, তারা এই মতামতগুলো পড়ে দেখবেন। আমরা আশস্ত করতে পারি, এগুলো বিবেচনায় নেওয়া হবে। যেগুলো নেওয়া সম্ভব হবে না সেগুলো পরবর্তী বাজেটে বিবেচনা করা হবে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বল্পকালীন বাজেট দেওয়া অথবা মূল বাজেট পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে এটি সম্ভব নয়। সঠিক সময়ে বাজেট সংসদে উপস্থাপন করা হবে। এবারের বাজেট প্রসঙ্গে অন্য প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা চলতি অর্থবছরটি যেভাবে শুরু করেছিলাম সেই অবস্থা এখন আর নেই। চলতি অর্থবছরের আট মাস আমরা ভালোভাবে পার করতে পেরেছি। পরের চার মাস খারাপ যাচ্ছে। আমরা এই ভালো-মন্দ দুটোর মাঝামাঝি একটা অবস্থান ঠিক রেখে পরবর্তী বাজেট তৈরি করতে হবে। আমাদের চলমান প্রকল্পগুলো শেষ করতে হবে। আসছে বাজেটে চলমান প্রকল্পগুলো শেষ করার প্রতি গুরুত্ব থাকবে। মন্ত্রণালয়গুলোকে সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য বাজেট প্রণয়নে দেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষের মতামত অনলাইনে দেওয়া যাবে। অর্থ বিভাগের ওয়েরসাইটে (http://www.mof.gov.bd) গিয়ে জাতীয় বাজেট ২০২০-২১ প্রণয়নে মতামত/পরামর্শ (Opinion/Suggestion for Budget : ২০২০-২১ Preparation) এই অপশনে ক্লিক করেই যে কেউ তার মতামত প্রদান করতে পারবেন। দেশ বা বিদেশ থেকেও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বাজেট প্রণয়নের ফরম পূরণ করে বাজেট প্রনয়ন সম্পর্কে মতামত ও সুপারিশ দেওয়া যাবে।